‘জলবায়ু উষ্ণতায় বাঘ ও সুন্দরবনের অস্তিত্ব হুমকিতে। সুন্দরবন ভালো না থাকলে বাঘও ভালো থাকবে না। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বাঘের ভূমিকা সর্বাধিক। সুন্দরবন এবং তার প্রধান অলংকার বাঘকে রক্ষা করা একটি চ্যালেঞ্জ। সুন্দরবনের সন্নিকটে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন এবং খালে বিষ প্রয়োগের ফলে বাঘসহ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। বাঙালির শৌর্য-বীর্যের প্রতীক, প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের স্মারক বাঘ কোনোভাবেই বিলুপ্ত হতে পারে না। কাজ করতে হবে বাঘ-মানুষের বিরোধ নিরসনে।’
সোমবার (২৯ জুলাই) সকালে সুন্দরবনসংলগ্ন মোংলার কাইনমারিতে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), পশুর রিভার ওয়ারটারকিপার এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ আয়োজিত বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে বনজীবীরা মানববন্ধনে এসব কথা বলেন।
পরে এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো. নূর আলম শেখ বলেন, ‘১৯৩০ সালে পূর্ব বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশ) ১৭ জেলার মধ্যে ১১ জেলাতেই বুনো বাঘ ছিল। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের অল্প কিছুসংখ্যক বাঘের কথা বাদ দিলে বলা চলে শুধু সুন্দরবনেই বুনো বাঘ টিকে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী বাঘসহ সুন্দরবনের সব প্রাণী রক্ষিত। এই আইন এবং আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় বাঘ শিকার এবং এর অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যবহার, বিপণন ও রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরেও সুন্দরবনে বাঘ শিকার ও পাচারে আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্র সক্রিয় আছে। বাঘ রক্ষায় বন বিভাগের ঘন ঘন টহল এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির ফলে চোরা শিকার কমিয়ে আনা সম্ভব। এ ছাড়া বাঘের বৈজ্ঞানিক গবেষণা, মনিটরিং এবং বাঘ-মানুষের বিরোধ নিরসনের কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।’
এ সময়ে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সুন্দরবনের বনজীবী মো. জাহিদ ব্যাপারী, মো. শাহাদত ব্যাপারী, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলানটিয়ার হেনা বেগম, জোসনা বেগম প্রমুখ।