ভারত এদেশকে কলোনি হিসেবে ব্যবহার করবে, তা হতে দেবো না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘ব্রিটিশ শাসনের কলোনি, পাকিস্তানের শোষণ; কোনও কিছুই মানিনি, যুদ্ধ করেছি আমরা। ভারত এদেশকে কলোনি হিসেবে ব্যবহার করবে—তা হতে দেবো না। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে অথর্ব করে রাখা হয়েছে। সীমান্তে তাদের যেভাবে রেখেছে, তার চেয়ে গ্রাম্য চৌকিদার অনেক ভালো। তাদের গুলি ছোড়ার অধিকার নেই। অথচ সীমান্ত রক্ষায় আমরা নিয়মিত অস্ত্র ও গুলি কিনছি।’

বুধবার (০৩ জুলাই) বিকালে যশোর টাউন হল মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দলের পূর্ব-ঘোষণা অনুযায়ী এই সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিএনপিকে জনগণের মন থেকে মুছে ফেলার যে ষড়যন্ত্র করছে সরকার, তা কখনও সফল হবে না। বরং নিজেদের কৃতকর্মের জন্য মুছে যাবেন আপনারা।’

বাংলাদেশ এখন মাফিয়াদের হাতে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংসদে কোনও রাজনীতিক নেই। প্রশাসনেও মাফিয়া। মাফিয়া-চক্রের প্রধান শেখ হাসিনা। এই চক্রের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।’

যশোর টাউন হল মাঠে আয়োজিত জেলা বিএনপির সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা

শুধুমাত্র ভারতকে সন্তুষ্ট করার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে এই সরকার আটক করেছে দাবি করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে তাদের নাকি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের ফসল আজিজ-বেনজীর।’

এই সরকার উন্নয়নের নামে দেশে ব্যাপক দুর্নীতি করছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘তাদের এই দুর্নীতির ভার টানতে হচ্ছে দেশের জনগণকে ভর্তুকির মাধ্যমে। ওই ভর্তুকি হলো ভৌতিক বিল, যা আপনাকে-আমাকে বছরের পর বছর দিতে হয়।’ 

সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্বের বিষয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা জানতাম সরকারি কর্মচারীরা জনগণের সেবক, কিন্তু এখন আমরা তাদের সেবকে পরিণত হয়েছি। কোনও কিছু হলে তারা বলে বড় স্যাররা চাকরি খেয়ে ফেলবে। আমাদের করার কিছুই নেই। আমাদের সবার দায়িত্ব হলো তাদের চাকরি টিকিয়ে রাখা।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে যশোরে সমাবেশ

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বেগম জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। তার মুক্তির পর যে স্বচ্ছ নির্বাচন হবে, তাতে আওয়ামী লীগ দুটি আসন পাবে। শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জ আসনে জনগণ পরাজিত করবে। কারণ সেখানের জনগণও আমাদের সঙ্গে আছে। আজকের এই বৈরী আবহাওয়ায় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি সেটাই প্রমাণ করে।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু ও কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল হোসেন আজাদ প্রমুখ।