খুলনার দাকোপ উপজেলার ধোপাদী গ্রামের মাঝবিল পাড়ায় হঠাৎ ১৩টি গরু মারা গেছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া উপজেলার কৈলাশগঞ্জ, লাউডোব, বাজুয়া ও বাণীশান্তা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অনেকগুলো গরু অসুস্থ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাতের পর জোয়ারের পানিতে বিষক্রিয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধোপাদী গ্রামের মাঝবিল পাড়ায় সুনীল মণ্ডলের ৫টি, পরিমল মিস্ত্রির ৪টি ও আর দুই কৃষকের চারটিসহ ১৩টি গরু মারা গেছে। এর মধ্যে পাঁচটি বড় ও বাকিগুলো বাছুর।
সুনীল মণ্ডল ও পরিমল মিস্ত্রি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বিলে ঘাস ও পানি খেয়ে গরুগুলো গোয়ালে ফিরে আসে। এরপর ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে সেগুলো মারা যায়। খবর পেয়ে প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্মকর্তারা বাড়িতে এসেছেন। তারা আপাতত বিলে বা তরমুজ ক্ষেতে গরু চরানো থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। জনসচেতনতার জন্য এলাকায় মাইকিং করছে প্রাণিসম্পদ দফতর।
স্থানীয় খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবের পর ব্যাপক বৃষ্টিতে বিভিন্ন বিলে পানি জমেছে। তরমুজ চাষে ব্যবহৃত দানাদার কীটনাশক গলে পানি বিষাক্ত হতে পারে, অথবা কীটনাশকের অব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল বা প্যাকেট থেকেও পানি বিষিয়ে উঠে গরুগুলোর মৃত্যু হতে পারে।
প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, বৃষ্টির পর কাঁচা ঘাসে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেশি থাকে। এসব কাঁচা ঘাসে নাইট্রোজেনের বিষক্রিয়ায় গরু মারা যেতে পারে।
কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) অশোক কুমার গাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এক ঘণ্টার ব্যবধানে ১৩টি গরু মারা গেছে। আশপাশের গ্রামেও অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। জোয়ারের পানি এখনও বিলে জমে আছে। সেগুলো পান করায় এমনটি হতে পারে। ওসব পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চলছে।
দাকোপ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বঙ্কিম কুমার হালদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অনেক দিন পর বৃষ্টি হলে পানি পেয়ে ঘাস দ্রুত বেড়ে ওঠে। যেসব ঘাস পানিতে ডুবে থাকে, তা থেকে বিষক্রিয়া হতে পারে। মারা যাওয়া গরুগুলোর ক্ষেত্রে এটাই হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তরমুজ চাষে কীটনাশক ব্যবহারের প্রভাবও থাকতে পারে। আমরা নমুনা সংগ্রহ করে তদন্ত করবো।