ডেঙ্গুর তথ্য নিতে যশোর হাসপাতালে গিয়ে ৩ সাংবাদিক লাঞ্ছনার শিকার

ডেঙ্গু রোগীদের বিষয়ে তথ্য নিতে যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক। এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক হারুন অর রশিদ এসব সাংবাদিককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ারও চেষ্টা করেছেন।

রবিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছনার শিকার সাংবাদিকরা হলেন—বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) যশোর প্রতিনিধি ও প্রেস ক্লাব যশোরের সহসভাপতি ওহাবুজ্জামান ঝন্টু, ৭১ টিভির যশোর প্রতিনিধি এসএম ফরহাদ ও ক্যামেরাপারসন শাহারুল ইসলাম ফারদিন।

৭১ টিভির যশোর প্রতিনিধি ও সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য জানতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক হারুন অর রশিদের মোবাইল নম্বরে কল দিই। মোবাইলে তথ্য দেবেন না জানিয়ে সরাসরি অফিসে যেতে বলেন তত্ত্বাবধায়ক। দুপুর ১টার দিকে তার অফিসে যাই আমরা তিন জন। আমাদের দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন তত্ত্বাবধায়ক। ওই সময় ফারদিন ক্যামেরা চালু করায় তাকে ধাক্কা দেন ওই চিকিৎসক। এরপর কয়েকজন চিকিৎসক ও কর্মচারীকে ডেকে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।’ 

তত্ত্বাবধায়ক কেন ক্ষুব্ধ হয়েছেন জানতে চাইলে এস এম ফরহাদ বলেন, ‘সম্প্রতি হাসপাতালের ডেঙ্গু চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর থেকে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। বিনা অনুমতিতে তার কক্ষে প্রবেশ করায় এবং ক্যামেরা সঙ্গে রাখার অজুহাতে তিনি আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। সেই সঙ্গে আমাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।’   

এ বিষয়ে জানতে হারুন অর রশিদকে একাধিকবার ফোন দিলেও ধরেননি। তবে হামলার খবর পেয়ে হাসপাতালে যাওয়া কয়েকজন সাংবাদিককে তিনি জানিয়েছেন, অনুমতি ছাড়া তার কক্ষে প্রবেশ এবং ক্যামেরা চালু করে মোটেও ভালো করেননি সাংবাদিকরা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘হাসপাতালে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা ঘটেছে। সাংবাদিকদের যতদূর সম্ভব তথ্য দেওয়া উচিত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের। তিনি তা করেননি। সেই সঙ্গে সংবাদকর্মীরা সরকারি অফিসে গিয়ে শিষ্টাচার বজায় রাখেননি বলে জেনেছি। সরকারি অফিসে সংবাদকর্মীদের শিষ্টাচার বজায় রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ধরনের ঘটনা না ঘটাই ভালো। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো।’

বিষয়টি বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে জানাবো উল্লেখ করে সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসক এবং সংবাদকর্মীদের মিলেমিশে কাজ করার আহ্বান জানাই।’

এদিকে, এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরসহ সাংবাদিকদের কয়েকটি সংগঠন এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।