খুলনা সিটি নির্বাচন

ইভিএম ভোটে ‘ধীরগতি’, স্বাভাবিক বলছেন প্রিজাইডিং অফিসার

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোট নেওয়া হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ভোটাররা জানিয়েছেন, ইভিএমে ভোট দিতে বেশি সময় লাগছে। এতে ভোটারদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তবে প্রিজাইডিং অফিসাররা বলছেন, ভোটের গতি স্বাভাবিক রয়েছে।

জানা গেছে, ভোট শুরুর পর কোনও কোনও কেন্দ্রে প্রথম ঘণ্টায় ৫ শতাংশ, ২য় ঘণ্টায় ৭ শতাংশ আবার কোথাও ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। ৩য় ঘণ্টায় বেলা ১১টায় ২১ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। 
২০ নম্বর ওয়ার্ডের আবু নাসের মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথম ভোট দিতে এসেছেন নিপা খান। তিনি বলেন, ‘জীবনের প্রথম ভোট ইভিএমে। ২০ সেকেন্ড লেগেছে ভোট দিতে। কোনও সমস্যা হয়নি। তবে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে দীর্ঘ সময়।’

এই স্কুলের ১৬১ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার রবিউল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রথম ২ ঘণ্টায় ১৫৫ ভোট কাস্ট হয়। ভোটার ১ হাজার ৫৯২ জন। কাস্ট হয় ৯ শতাংশ। ভোটের হার স্বাভাবিক রয়েছে।’
এ স্কুলের ১৬৩ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মীর্জা তৌফিকুল আজম বলেন, ‘বেলা ১১টা পর্যন্ত কেন্দ্রে ২৬৬টি ভোট কাস্ট হয়। মোট ভোটার ১ হাজার ২৬৭। ভোট দেওয়ার হার ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ।’
১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে দেখা গেছে, নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। প্রতিটি ভোট কক্ষের সামনে অপেক্ষা করছেন নারী ভোটাররা।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিসমিল্লাহ মহল্লা এলাকার বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, ‘তাড়াতাড়ি ভোট দিয়ে বাড়ি যাবো বলে ৭টায় ভোটকেন্দ্রে যাই। তবে ভোটকেন্দ্রে দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।’
একই কেন্দ্রে ভোটার শাহিনুর বেগম বলেন, ‘দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে কোমর ব্যথা হয়ে গেছে। এমন অবস্থা জানলে বিকালে আসতাম।’

ইসলামাবাদ কলেজিয়েট কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৯৪ জন। প্রথম ঘণ্টায় সকাল ৯টা পর্যন্ত সেখানে ভোট পড়ে ১৬৬টি। 

২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি এম এম সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ৬৩০ জন। প্রথম ঘণ্টায় সেখানে ভোট পড়ে মাত্র ২৭টি।

খালিশপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে ১ ঘণ্টায় ভোট পড়ে ২৪টি। সেখানে মোট ভোটার ২ হাজার ১৯ জন। 

ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মিঠুন সরকার বলেন, ‘প্রত্যেকটি ভোটারকে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বুঝিয়ে দিতে হচ্ছে। এজন্য প্রথম ঘণ্টায় দেরি হয়েছে।’

খুলনায় ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন এবং নারী ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন।

এই সিটিতে মেয়র পদে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের শফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের আব্দুল আউয়াল, জাকের পার্টির গোলাপফুল প্রতীকের এসএম সাব্বির হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দেয়ালঘড়ি প্রতীকের এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক। 

এ ছাড়া ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে নগরীর ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে দুই জন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যমতে, খুলনার প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি ও কেন্দ্রের সুবিধাজনক স্থানে দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলো মোট ২ হাজার ৩১০টি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে।