তবে চুয়াডাঙ্গা পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছর শহরতলীর ঘোড়ামারা ব্রিজ এলাকায় বর্জ্য শোধনের ডাম্পিং স্টেশনের জন্য তিন একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ডাম্পিং স্টেশনের জন্য এরই মধ্যে প্রায় ৮ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুতই দরপত্র আহ্বান করে বর্জ্য শোধানগারের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
প্রথম শ্রেণি বিশিষ্ট ৩৭ দশমিক ৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় প্রায় ২ লাখ মানুষের বাস। কাগজে প্রথম শ্রেণি হলেও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পৌর এলাকায় নেই বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। যার ফলে বিশাল আয়তনের লাখ লাখ মানুষের অধিক পরিমাণ বর্জ্য আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘদিন থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফেলা হচ্ছে এসব ময়লা বর্জ্য। সেখানে তৈরি হচ্ছে আবর্জনার স্তুপ। এতে করে দুষিত হচ্ছে পৌর এলাকা, ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ প্রকৃতি। এছাড়া শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মাথাভাঙা নদীর পাড়ে বর্জ্য ফেলে নদীকে বানানো হচ্ছে ময়লার ভাগাড়।
পৌর এলাকার বাসিন্দা ভিমরুল্লার ইকরামুল হক মোল্লা জানান, শহরে বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ মানুষ অসচেতনভাবেই যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলছে। পরবর্তীতে সেই আবর্জনা সংগ্রহ করে মাথাভাঙা নদীর পাড় এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফেলছে পৌরসভা। এতে করে নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে, দুষিত হচ্ছে শহরের প্রতিটি এলাকা। নানাভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে পৌর বাসিন্দারা।
ছাগল ফার্ম এলাকার মুদি দোকানি মিনারুল ইসলাম জানান, শহরের অধিকাংশ ময়লা আবর্জনা নিয়ে এসে এই খোলা জায়গায় ফেলা হয়। এখান থেকেই সৃষ্টি হয় বিকট দুর্গন্ধ। ভোগান্তিতে পড়ে যাতায়াতকারীরা। প্রায় সময়ই দেখা যায় যাত্রীরা নাকে মুখে রুমাল ব্যবহার করে ওই সড়ক পার হচ্ছে।
এদিকে শহরের বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য গত বছরে ডাম্পিং স্টেশন তৈরির উদ্যোগ নেয় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। সে সময় শহরতলীর চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের ঘোড়ামারা ব্রিজ এলাকায় তিন একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণ করা হলেও নানা জটিলতায় এখনও শুরু হয়নি ডাম্পিং স্টেশনের কাজ। অথচ সেই খোলা জায়গাতে দেদারছে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। এতে করে ভোগান্তির শিকার ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী হাজারও মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সচিব কাজী শরিফুল ইসলাম জানান, শ্রেণি অনুযায়ী অনেক আগেই ডাম্পিং স্টেশন নির্মিত হওয়ার দরকার ছিল। নানা কারণে তা গড়ে ওঠেনি। তবে এবার ডাম্পিং স্টেশন তৈরির জন্য গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ঘোড়ামার ব্রিজ এলাকায় তিন একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ২ কোটি ৯২ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৩ টাকা দিয়ে জমিটি অধিগ্রহণ করা হয়। তবে বেশ কিছুদিন পার হলেও চলতি বছরের আগস্ট মাসে ডাম্পিং স্টেশন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬৩৪ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। দ্রুতই সব কাগজে নিয়ম শেষ করে দরপত্র আহ্বান করে ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ কাজ শুরুর আশ্বাস তার।
চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, এখন শহরের জনবহুল এলাকা ও নদীতে আবর্জনা তুলনামূলক কম ফেলা হয়। নির্ধারিত স্থানেই ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। তবে ডাম্পিং স্টেশন তৈরি হলে শহরের ময়লা আবর্জনার ছিটেফোটাও আর চোখে পড়বে না। তাই চেষ্টা করছি দ্রুতই কাজ শুরু করার। এছাড়া উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে ডাস্টবিন নির্মাণ প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করি। পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় ডাস্টবিন নির্মাণ করা হবে।