নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে মা-ছেলে ও খালার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার ইয়াসিনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকা থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার স্বপ্না আক্তার (৩৫), তার বোন লামিয়া আক্তার (২৩) এবং লামিয়ার চার বছর বয়সী শিশুসন্তান আব্দুল্লাহ। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে লামিয়ার স্বামী মো. ইয়াসিনকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইয়াসিন মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার মো. দুলালের ছেলে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ইয়াসিন, তার বাবা মো. দুলাল ও বোন শিমুকে আসামি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মা-ছেলে ও খালার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার আসামি ইয়াসিনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত পাঁচ দিনের মঞ্জুর করেন। হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পাঁচ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে লামিয়ার বিয়ে হয়। বড়বোন স্বপ্না লামিয়ার পাশাপাশি মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় সংসারের খরচ চালাতে লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জে পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তবে মাদকের টাকার জন্য প্রায় সময়ে লামিয়াকে মারধর করতেন এবং হত্যার হুমকি দিতেন ইয়াসিন। গত ৭ এপ্রিল দুপুরে লামিয়ার সঙ্গে কথা হয় মেজো বোন মুনমুনের। এরপর থেকে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ ছিল। ওই দিন ইয়াসিন তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে দুই বোন ও ভাগনিকে হত্যা করে লাশ গুম করতে পুকুরপাড় এলাকার ইটের সুরকির নিচে সিমেন্টের বস্তা দিয়ে চাপা রাখে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসিনুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তিন জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা করেছে। গ্রেফতার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’
এর আগে শুক্রবার দুপুরে মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকার ইটের সুরকির নিচে সিমেন্টের বস্তা দিয়ে চাপা দেওয়া অবস্থায় লাশগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন খালাসী বলেন, ‘ইটের সুরকির নিচে দুর্গন্ধ ও একটি হাত দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানান। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই নারীর গলাকাটা এবং শিশুর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। চার-পাঁচ দিন আগে হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।’