পাগলা মসজিদের দানবাক্সে টাকার সঙ্গে মনোবাসনা পূরণের আকাঙ্ক্ষার বেশ কিছু চিঠি-চিরকুট পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি চিরকুট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে লেখা, ‘পাগলা চাচা, শেখ হাসিনা কোথায়।’
এমন আরেকটি চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘ড. ইউনূস স্যারকে আরও ৫ বছর চাই- সাধারণ জনগণ। আল্লাহ তুমি সহজ করে দাও।’ এমন আরও অনেক চিঠিতে সাধারণ মানুষের তাদের মনের ভাব প্রকাশ করেছেন পাগলা মসজিদে। প্রতিবারই দানবাক্স খুলে টাকা গণনার সময় মিলে অজ্ঞাত পরিচয়ের বহু চিঠি-চিরকুট।
জানা গেছে, প্রতি তিন মাস পরপর পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকগুলা খোলা হয়। সবশেষ আজ শনিবার সকালে মসজিদের ১১টি লোহার সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ২৮ বস্তা টাকা। আর এসব টাকা গণনায় অংশ নেন ব্যাংকের ৬০ কর্মচারীসহ ৩৭০ জন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীসহ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের নিচতলায় বিভিন্ন স্থানে থাকা দানসিন্দুকগুলো একে একে খোলা হয়। এরপর প্লাস্টিকের বস্তাভর্তি টাকা নেয়া হয় দ্বিতীয় তলায়। মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় টাকা গণনার কাজ।
দানবাক্সে পাওয়া ২৮ বস্তা টাকা গণনার কাজে অংশ নেয় পাগলা মসজিদ নুরানি কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১০০ জন শিক্ষার্থী, জামিয়াতুল ইমদাদীয়ার ২০০ শিক্ষার্থী, রপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ তিন শতাধিক মানুষ।
টাকা গননা কাজে দিনভর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নেওয়া হয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এবার ৪ মাস ১১ দিন পর দানসিন্দুক খোলা হয়। এর আগে, সবশেষ গত ৩০ নভেম্বর দানসিন্দুক থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ টাকা । এবার আরও একটি দানসিন্দুক বাড়ানো হয়েছে।
জনশ্রুতি আছে, এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চরে। ওই পাগল সাধকের মৃত্যুর পর এখানে নির্মিত মসজিদটি পাগলা মসজিদ হিসেবে পরিচিতি পায়। পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন। গত কয়েক বছর ধরে দিন দিন বাড়ছে দানের টাকার পরিমাণ।