ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ, ‘চাঁদা না দেওয়ায় হামলা’ বলছে পরিবার

‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমানে যাদের ক্ষমতা আছে তাদের লোকজন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা না দেওয়ায় আজ তিনি (চেয়ারম্যান) ইউনিয়ন পরিষদ গেলে তাকে মারধর করা হয়। এতে আমার স্বামী গুরুতর আহত হয়েছেন।’

এভাবেই অভিযোগের সুরে বলছিলেন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ ওহাব খান খোকার (৬৫) স্ত্রী লাইলী বেগম। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, চেয়ারম্যান ওহাব খান গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের খিলগাঁও গ্রামের মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

লাইলী বেগম আরও অভিযোগ করেন, মারধরের পর হামলাকারীরা চেয়ারম্যানকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ সময় তার কাছে থাকা নগদ ৮০ হাজার টাকা, তিন লাখ টাকার স্বাক্ষরিত চেক, একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তবে তিনি হামলাকারীদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত ছিলেন চেয়ারম্যান। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর বর্তমানে যাদের ক্ষমতা আছে তাদের লোকজন ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। চাঁদা না দেওয়ায় আজ (বৃহস্পতিবার) তিনি ইউনিয়ন পরিষদ গেলে তাকে মারধর করা হয়। এতে আমার স্বামী গুরুতর আহত হয়েছেন। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়ন পরিষদের একজন জানান, বেলা ১১টায় চেয়ারম্যান ওহাব খান পরিষদে আসেন। স্বাভাবিক নিয়মেই তিনি অফিসিয়াল কাজকর্ম শুরু করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পরিষদে বসে কাজ করেন। দুপুর ১টার দিকে কিছু যুবক পরিষদ এসে চেয়ারম্যানকে মারধর শুরু করে। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এতে তার মাথা ও চোয়ালের ডান কোনায় রক্তাক্ত জখম হয়।

কাপাসিয়া থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আব্দুল হালিম জানান, চেয়ারম্যান এম এ ওহাব খান খোকা এ মুহূর্তে থানায় রয়েছেন। তাকে এলাকার কতিপয় যুবক ধরে থানায় সোপর্দ করেছে।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ ওহাব খান খোকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কাপাসিয়া উপজেলার যুবদলের সদস্যসচিব জুনায়েদ হোসেন লিয়ন বাদী হয়ে তার নামে কাপাসিয়া থানা একটি মারামারির মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

চাঁদা না দেওয়ায় মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগের বিষয়ে ওসি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। জনতা কেন আটক করেছে তা আমার জানা নেই।’