ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মান্নান মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মান্নান মাতুব্বরের স্ত্রী রুনা বেগম বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে বোয়ালমারী থানায় মামলাটি করেছেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মজিবর রহমান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বশত্রুতার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার ভোরে খারদিয়া, নটখোলা, হাসামদিয়া, ময়েনদিয়া, পরমেশ্বরদী এলাকার হাজারো লোকজন দলবদ্ধ হয়ে মান্নান মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও বিভিন্ন ভবনে অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চেয়ারম্যানের ছেলে মাসুদ মাতুব্বর (৩৫), চেয়ারম্যানের ভাতিজা শাকিল মাতুব্বরকে (২৬) আহত করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বারখাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও রায়ের পর থেকে আবুল কালাম আজাদ পলাতক রয়েছেন। এই মামলার সাক্ষী ছিলেন চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বর। তার সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় হয় বলে ধারণা করেন আবুল কালামের অনুসারীরা।
এ ছাড়া বিগত দিনে ময়েনদিয়া বাজারে মান্নান চেয়ারম্যান একক রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তিনি ইতিপূর্বে একটি হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন। মূলত দীর্ঘদিনের এসব ক্ষোভ থেকেই বিক্ষুব্ধ জনতা অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছেন বলে মনে করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনার সময় মান্নান মাতুব্বর এবং পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। আশপাশের লোকজন হামলার প্রতিরোধ করতে এলে বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ছেলে জিহাদ মিয়ার নেতৃত্বে এই হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তবে জিহাদ মিয়ার মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় এ অভিযোগের ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
হামলার ঘটনায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৬০০-৭০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে শুক্রবার বিকাল ৫টায় বোয়ালমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন চেয়ারম্যানের স্ত্রী রুনা বেগম। রাতে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার এসআই শরীফ আব্দুর রশিদ বলেন, মামলা হয়েছে। এখন তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মজিবর রহমান বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে মামলা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।