অটো পাসের দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও ডিগ্রির শিক্ষার্থীদের

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি ২০১৯-২০ সেশনের পরীক্ষা না নিয়ে অটো পাসের দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশ ও কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। 

ডিগ্রির ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা ‘ডিগ্রি বৈষম্য নিরসন ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিক্ষোভ করে এ কর্মসূচি পালন করেন। সেখানে কর্মসূচি পালন শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, ডিগ্রি শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে এবং ডিগ্রি প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফলাফলের ভিত্তিতে তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে হবে। ডিগ্রি কোর্স সর্বোচ্চ ৩ বছরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও গত ৬ থেকে ৭ বছরেও ফাইনাল পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপ শেষ হয়নি। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে অবহেলিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি কোর্সের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ডিগ্রি থেকে বিসিএস বা ভালো চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ২ বছরের মাস্টার্স করা প্রয়োজন হয়।

তারা আরও জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ডিগ্রি কোর্সে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রী বেশিরভাগই নিয়মিত, অনিয়মিত, প্রাইভেট ও সার্টিফিকেট কোর্সের এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। জীবিকার তাগিদে পড়ালেখার পাশাপাশি অনেকে কাজকর্ম করেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনেক সময় চাকরিও ছেড়ে দিতে হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে আমাদের অনেকে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। আন্দোলনে আহত-ট্রমায় ভোগা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। এ ছাড়া বন্যায় অনেকের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে মানবিক কারণে দ্রুততার ভিত্তিতে শেষ করে অবিলম্বে ডিগ্রি প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের সিজিপিএ-এর ভিত্তিতে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের সব সেশনের ফাইনাল শিক্ষার্থীদের দ্রুত অটো পাস দিয়ে তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশের অনুরোধ করছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডিগ্রিতে অটো পাসের দফা দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি পালন করছেন। আজ উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করেছেন তারা। এ বিষয়ে ডিগ্রি শাখার দায়িত্বে যিনি আছেন, তিনি ভালো বলতে পারবেন।’

এ ব্যাপারে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি শাখার কর্মকর্তা এরশাদ মিয়ার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডিগ্রিতে আড়াই লাখ শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাদের অটো পাশের দাবি দীর্ঘদিনের। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভিসি স্যার শিক্ষা সচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন। শিক্ষা সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অটো পাশের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন। কারণ এটি করলে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। পরে অন্যরাও এমন দাবি করতে পারেন। ইতোমধ্যে পরীক্ষার রুটিন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করা হবে।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ স্যার আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আমাদের দাবির সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন। তবে স্যার আমাদের বলেছেন, অটো পাশের বিষয়টি স্যারের হাতে নেই। এটি মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা সচিবের বিষয়।’

গাজীপুরের মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক আল আমীন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যান চলাচলে কোনও ধরনের সমস্যা হয়নি।’