প্রকল্পে দুর্নীতি করে ইচ্ছেমতো বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে আ.লীগ সরকার: জ্বালানি উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অনেক অনিয়ম হয়েছে। ২০১০ সালে দ্রুত জ্বালানি সংগ্রহ আইন করে প্রতিযোগিতা ছাড়াই প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। ফলে সরকারের খাতিরের লোককে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। ফলে দুই দিক থেকেই ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। বেশি দামে বিদ্যুৎ প্রকল্প করা এবং সরকারের ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল অনিয়মের মাধ্যমে বেশি দামে বিদ্যুত কিনে নানা অজুহাতে গ্রাহকের
কাছে বেশি দামে বিক্রি করা।’

শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পাটুরিয়া ঘাটের অদূরে স্থাপিত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৩৫ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘শিগগিরই বিদ্যুতের দাম কমানো যাচ্ছে না। কারণ প্রতি বছর এই খাতে ৪২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। ইতোপূর্বে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। কমদামে বিদ্যুৎ না কেনা পর্যন্ত আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। তখন বিদ্যুতের দাম কমানো যাবে। বিদ্যুৎ বা জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করতে হলে আগে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে যেতে হতো। এটা তৃতীয় পক্ষের কাজ। তারা সব পক্ষের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু গত বছর কমিশনে একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে, তা হলো সরকার ইচ্ছা করলে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি করতে পারবে। এতে কেউ আপত্তি করতে পারবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আর আগের মতো অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি করা হবে না। আমি দায়িত্ব গ্রহণের প্রথমদিনই ২০১০ সালের আইনের ভবিষ্যৎ প্রয়োগ বন্ধ করে দিয়েছি। একইসঙ্গে সরকারের দাম বাড়ানোর ক্ষমতার ধারাটিও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে আর মুখ চিনে এবং খাতিরের লোককে প্রকল্প দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেই কাজ পেতে হবে। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, গত ১৬ বছরের অনিয়ম-দুর্নীতি ১৬ দিনেই অপসারণ করা সম্ভব নয়। তবে আমরা সব সেক্টরের বৈষম্য নিরসনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যাতে মানুষ একটু শান্তি পায়।’

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, ‘দেশের উত্ত-পূর্বাঞ্চলে বন্যাকবলিত এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত বৈদ্যুতিক লাইন চালু করা হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুজন মাহমুদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন এবং স্পেক্টা গ্রুপের চেয়ারম্যান খান মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন।