মসজিদে এতেকাফে বসা যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় মসজিদে এতেকাফে বসা মাঈন উদ্দিন নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে আরেক যুবক।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ভোরে উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চানপুর বায়তুল আমান জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। একই দিন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।

নিহত মাঈন উদ্দিন (২৪) চানপুর এলাকার মৃত হাবিবুল্লাহ মিয়ার ছেলে ও অটোরিকশা চালক ছিলেন। এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতকারী মাহিম কাজিকে (১৯) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাহিম ওই এলাকার মোস্তফা কাজির ছেলে। তারা উভয়ে মসজিদে ১০ দিনের জন্য এতেকাফে বসেছিল।

তাদের সঙ্গে এতেকাফে বসা দুই ব্যক্তি ও স্বজনরা জানান, ১২ এপ্রিল তিন যুবক ও এক বৃদ্ধ চানপুর বায়তুল আমান জামে মসজিদে এতেকাফে বসেছিল। গত বুধবার রাতে এতেকাফে বসার স্থান নিয়ে মাহিমের সঙ্গে মাঈন উদ্দিনের বাগবিতণ্ডা হয়। ওই দিন সেহরির পর ফজরের নামাজ পড়ে মাঈন উদ্দিন মসজিদে ঘুমিয়ে পড়ে।

এ সুযোগে ফল কাটার ছুরি দিয়ে মাঈন উদ্দিনকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় মাহিম। পরে তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। 

মাঈন উদ্দিনের দুলাভাই মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে আমার শ্যালককে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় মাহিম। পরে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। কেন মাহিম এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা জানি না। তার সঙ্গে কোনও বিরোধ ছিল না মাঈন উদ্দিনের।’

বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বক্কর ছিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তারা চার জন ২০ রমজান মসজিদে এতেকাফে বসেছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে চার জনের মধ্যে একজন মসজিদের ছাদে যায়। মসজিদের ভেতরে মাহিম অবস্থান করছিল। মাঈন উদ্দিনসহ অপর দুই জন ঘুমিয়েছিল। এ সুযোগে মাহিম ফল কাটার ছুরি দিয়ে মাঈন উদ্দিনকে আঘাত করে। গুরুতর অবস্থায় তাকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারা যায় মাঈন উদ্দিন।’

এ ঘটনায় মাঈন উদ্দিনের বোন বাদী হয়ে মাহিমকে আসামি করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কোন বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে মাহিম হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে বলেছে, স্বপ্নে নাকি কিছু একটা দেখে হত্যা করেছে। বিষয়টি আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’