রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ফেরিতে যানবাহন লোড আনলোড বিঘ্নিত হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে এ সমস্যা। এতে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটগামী যানবাহনের চাপ অব্যাহত রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ফেরি পারাপারের জন্য অপেক্ষায় থাকা ঢাকামুখী যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। ট্রাকচালকদের পদ্মা নদী পার হতে ৩০ মিনিটের পথ পেরুতে লাগছে প্রায় ২-৩ দিন। আবার যাত্রীবাহী বাসকে ৬-৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করে পেতে হচ্ছে ফেরির নাগাল।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলে মোট ২০টি ফেরি দিয়ে নিয়মিত যানবাহন পারাপার হয়। কিন্তু এর মধ্যে দুটি ফেরি রো রো (বড়) মওলা ও ইউটিলিটি (ছোট) ফেরির যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেরামত কাজ চলছে। এছাড়া শিমুলিয়া ও বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি চলাচল এখনও স্বাভাবিক না হওয়ায় যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। ওই রুটের অধিকাংশ পণ্যবাহী গাড়ি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুট ব্যবহার করছে। ফলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ পড়ছে।
ঘাট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরিগুলো ২২৯টি ট্রিপে বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে পাটুরিয়া গেছে। এর মধ্যে যাত্রীবাস রয়েছে ৬৩৮টি, ট্রাক ১২৫৮টি, ছোট বা ব্যক্তিগত যানবাহন ১৮৭২টি। সব মিলিয়ে ৩৭৬৮টি যানবাহন দৌলতদিয়া ফেরিঘাট হয়ে পাটুরিয়া পৌঁছায়।
এদিকে ঘাটের ওপর ট্রাকের চাপ কমাতে রাজবাড়ী কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে গোয়ালন্দ মোড় থেকে কল্যাণপুর পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে কয়েকশ’ পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান।
ট্রাকচালক মো. হারুন সরদার বলেন, গাড়ির চাপ থাকলেও ঘাট সংকট রয়েছে। মাত্র তিন-চারটি ঘাট দিয়ে এত গাড়ি সহজে পারাপার করা সম্ভব নয়। মাত্র আধা ঘণ্টার পথ যেতে আমাদের লাগছে ২-৩ দিন। ফলে রাত জেগে গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে সময় পার করতে হয়েছে। ক্লান্ত চোখেই গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাব উদ্দিন বলেন, ২০টি ফেরির মধ্যে দুটি ফেরি মেরামত থাকায় ও ফেরিঘাট সংকট থাকায় যানবাহনের জট তৈরি হয়েছে। বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। ভোগান্তি ও যানজট কমাতে সর্বক্ষণ চেষ্টা চলছে। এছাড়া পদ্মার পানি কমে পন্টুন থেকে সংযোগ সড়ক উঁচু হওয়ার বিষয়টি বিআইডব্লিউটির প্রকৌশল বিভাগকে অবগত করা হয়েছে।