৩৫ বছর ধরে তালাবদ্ধ বাসাইল গ্রন্থাগার 

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটি ৩৫ বছর ধরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গ্রন্থাগারের লাখ লাখ টাকার বই ও আসবাবপত্র।

এদিকে, গ্রন্থাগারটি বন্ধ রাখায় পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাঠকরা। এতে উপজেলাবাসী ও সচেতন পাঠকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে উপজেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর দুই বছর পর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের পাশে দোতলা ভবনের ছোট একটি কক্ষে এই গ্রন্থাগারের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে স্থানীয় জ্ঞানপিপাসুদের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয় পাঠাগারটি। কিন্তু রহস্যজনক কারণে গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠার এক বছর পর বন্ধ হয়ে যায়। বেশ কিছুদিন এটি উপজেলা জামে মসজিদের মুয়াজ্জিনের শয়নকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমানে এটি সার্বক্ষণিক তালাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। 

গ্রন্থাগারে মাঝে মাঝে উপজেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত সেলাই মেশিন ও খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সামগ্রী রেখে বিতরণ করা হচ্ছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। ফলে উপজেলাবাসী পাঠাগারটিতে বই পড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গ্রন্থাগারটি বন্ধ থাকায় লাখ লাখ টাকার বই ও আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জ্ঞানপিপাসুদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা পুনরায় এটি চালু করার দাবি জানিয়েছেন।  

স্থানীয় বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গ্রন্থাগারটি বছরের পর বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এটি চালু থাকলে ছেলেমেয়েরা বই পড়ার সুযোগ পেতো। বন্ধ থাকায় আমরাও বই পড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাই দ্রুত চালু করার দাবি জানাচ্ছি।’

স্থানীয় লার্ন মোর বাংলাদেশ গ্রন্থাগারের সভাপতি সজীবুর রহমান খান বলেন, ‘নতুন পাঠক তৈরি ছাড়াও শিক্ষা ও সংস্কৃতির মুক্তচর্চার জন্য উপজেলা পর্যায়ে সরকারি গ্রন্থাগারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলা গ্রন্থাগারটি দীর্ঘদিন ধরে রন্ধ রয়েছে। বন্ধ থাকায় উপজেলাবাসী এর সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি পুনরায় চালু করা প্রয়োজন।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি পরিষদে নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ার পর গ্রন্থাগারটির জন্য বেশ কিছু বই কিনেছি। এখন গ্রন্থাগারটি বন্ধ রয়েছে। তবে একজন স্টাফ নিয়োগ দিয়ে গ্রন্থাগারটি আবার চালু করা হবে।’

তবে এই গ্রন্থাগারে কতটি বই রয়েছে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা পারভীন বলেন, ‘গ্রন্থাগারটির তথ্য আমার কাছে নেই। এটা উপজেলা পরিষদের আওতায়। তারা এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’

উপজেলা পরিষদের সাটঁ-মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি পরিষদে যোগদানের পর গ্রন্থাগারের শুধু চাবি পেয়েছি। কিন্তু কতগুলো বই রয়েছে, তা আমার জানা নেই। কেউ আমাকে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়নি। তবে গ্রন্থাগারে অসংখ্য বই এবং আসবাবপত্র রয়েছে।