বোরকা পরে বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

ফেনীর সোনাগাজীতে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বোরকা পরে আবুল হাসেম (৪০) নামে বিএনপির এক কর্মীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় রাসেল (৩৫) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে সোনাগাজী-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের ওলামা বাজারের ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল হাসেম সোনাগাজীর চরদরবেশ ইউনিয়নের পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামের শুক্কুর মিয়ার ছেলে। তিনি পৌরসভার ইসলাম মুহুরি রোড এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ওরফে গিয়াস চেয়ারম্যানের সহযোগী ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকালে আবুল হাসেম সোনাগাজী পৌরসভার ইসলাম মুহুরি রোড এলাকার ভাড়া বাসা থেকে মোটরসাইকেলে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে চরদরবেশ ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকায় পৌঁছালে বোরকা পরা কয়েক ব্যক্তি তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। পরে দুর্বৃত্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসেমকে উদ্ধার করে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পাঠানো হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পৌঁছালে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

হাসেমের ভাতিজা মোহাম্মদ টিপু জানান, তার চাচার সঙ্গে প্রতিবেশী বেলালের জায়গাজমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ২০২১ সালের ৩১ মে দুই পক্ষের মারামারির সময় বেলাল মারা যান। ওই মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আবুল হাসেম। তিনি প্রায় তিন বছর কারাগারে থেকে কয়েক মাস আগে জামিনে বেরিয়ে ছিলেন। সেই ঘটনার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চরচান্দিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম হোসেন বলেন, আবুল হাসেম বিএনপির কর্মী ছিলেন। তার হত্যার ঘটনায় আটক রাসেল সম্প্রতি ফেসবুকে আবুল হাসেমকে উদ্দেশ্য করে বেশ কয়েকটি পোস্ট দেন। পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করছি।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বায়েজীদ আকন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। কেন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’