কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জায়গা দখল করে আওয়ামী লীগ অফিস করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলেন ন্যাশানাল ফ্রিডম ফাইটার্স ফাউন্ডেশনের নেতারা।
বক্তব্যে ন্যাশানাল ফ্রিডম ফাইটার্স ফাউন্ডেশন কুমিল্লা শাখার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস আলী বলেন, ‘কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়ের রামঘাটলা এলাকায় কুমিল্লা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ১০ শতাংশ জায়গা বরাদ্দ ছিল। এতে নজর লাগে কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের। তাই নানান কৌশলে সেই জায়গা নেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। পরে সেই জায়গায় আওয়ামী লীগের কুমিল্লা মহানগরের অফিস করার পরিকল্পনা করেন। সেজন্য ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের এই ১০ শতাংশ জমি বাগিয়ে নিতে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুলকে হাত করেন। সফিউল আহাম্মদ বাবুল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে ছিলেন।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস আলী বলেন, ‘কুমিল্লা সদরের এমপি বাহার ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধাদের বরাদ্দকৃত জায়গাটি অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সফিউল আহমেদ বাবুলের কাছ থেকে এক কোটি ৪৮ লাখ টাকার বিনিময়ে রেজিস্ট্রি দলিল করে নেয়। সফিউল আহমেদ বাবুল সংসদের জায়গা বিক্রি করে এনসিসি ব্যাংক কুমিল্লা শাখার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করে।’
এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা প্রশ্ন রাখেন, সংগঠনের নামে জায়গা এক ব্যক্তি কীভাবে দলিল সম্পাদন করতে পারে? তা সম্পূর্ণ অনিয়ম অবৈধ। এ বিষয়ে আমাদের ২০২৩ সালে হাইকোর্ট একটি রিট পিটিশন করা আছে।
বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, সফিউল আহমেদ বাবুল মূলত আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। এমপি বাহার তার দলীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের জায়গা দখলের জন্য এই পাঁয়তারা করেছিল। যার সঙ্গী করে নেন সফিউল আহমেদ বাবুলকে। আমরা আমাদের জায়গা ফেরত চাই।
মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, আমরা এ বছরের ১৩ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নিকট কেন্দ্রীয়ভাবে একটি অভিযোগ পেশ করেছি। এর আগেও ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় ভবন ভেঙে বিক্রয় প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা একটি অভিযোগ দিয়েছিল। কিন্তু তখন এমপি বাহার তার প্রভাব খাটিয়ে কোনও ব্যবস্থা নিতে দেয়নি। বর্তমান সরকার জনগণের সমর্থিত ও বৈষম্যবিরোধী বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা এই সরকারের কাছে আমাদের এই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জায়গা ন্যায্যভাবে চাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এফএফ ফাউন্ডেশনের সদস্য অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর হারুনুর রশিদ, মুকবুল আহমদ, মো. হানিফসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা।