নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের পর জুতার মালা গলায় পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ওই যুবক পরিসংখ্যান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান উপলক্ষে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে আটক করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এরপর তাকে মারধর করেন তারা। পরে তাকে জুতার মালা পরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনায় জড়িত ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, ওই যুবক ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিএফসির (চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই উপপক্ষের নেতাকর্মীরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। আন্দোলনের সময় ছাত্রদল কর্মীদের মারধরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন ওই যুবক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রদল কর্মী শামীম উদ্দিন বলেন, ‘২০২২ সালের দিকে আমি গোপনে ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এটি জানতে পেরে আমাকে শাহ আমানত হলের ৩০২ নম্বর কক্ষে নিয়ে তিনি মারধর ও নির্যাতন করেছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকে মারধরের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। তাই তাকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদল নেতাকর্মীসহ অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। তাই ছাত্রদল ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।’
পুলিশে সোপর্দ করার সময় ওই যুবক বলেন, আমি শাহ আমানত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলাম। তবে কোনও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল না। আমাকে মিথ্যা অভিযোগে মারধর করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার বলেন, ‘ভুক্তভোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’