মিয়ানমার থেকে ফিরলো ২০ কিশোর, পরিবারের কাছে হস্তান্তর

দীর্ঘ দুই বছর পর মিয়ানমারে আটক থাকা ২০ বাংলাদেশি কিশোর ফিরে এসেছে স্বজনদের কাছে। অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক ওই কিশোরদের নিয়ে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে দেশে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বিএনএস সমুদ্র অভিযান’।

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজটি পৌঁছানোর পর তাদের নেওয়া হয় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে। যেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। সন্তানদের ফিরে পেয়ে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশ। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের হস্তান্তর করা হয়।

তারা হলো- জুবায়েদ হোসেন জুয়েল, সরওয়ার কামাল, তারেক মনওয়ার, নাজিম উদ্দীন, নূর মোহাম্মদ, মো. নজরুল ইসলাম, মো. খোকন, মো. ফাহিম, মো. হাশেম, মো. আব্দুল্লাহ, মনসুর আলম, মো. মোবারক, রফিকুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, রবিউল আলম, মোহাম্মদ হেলাল, রফিকুল ইসলাম, মো. ফয়সাল, মো. সাজ্জাদ ও মো. আসাদ।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কামরুজ্জামান বলেন, ‘২০ বাংলাদেশি নাগরিক ফেরত এসেছে। তাদের প্রত্যেকের অভিভাবক চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে এসেছেন। তাদের আমরা অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছি।’

তিনি বলেন, ‘এই প্রত্যাবাসন আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার সফল প্রতিফলন। যারা এখনও বিদেশে বিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনা আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, অবৈধ ও অননুমোদিত উপায়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রায়শই দুঃখজনক পরিণতি ডেকে আনে। দীর্ঘ সময় পর ফিরে আসা এসব নাগরিকদের অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য সতর্কবার্তা।’

মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, এই কিশোররা দালালের প্রলোভনে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিল। অনুপ্রবেশের সময় মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটক করে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং তারা দীর্ঘদিন আটক অবস্থায় ছিল।

প্রতিবেশী দেশটিতে সম্প্রতি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বিএনএস সমুদ্র অভিযান’ ১২০ টন ত্রাণ নিয়ে গত ১১ এপ্রিল ইয়াঙ্গুন বন্দরে পৌঁছে। সেই সঙ্গে উদ্ধারকারী দল হিসেবে গিয়েছিলেন অর্ধশতাধিক বাংলাদেশি। ত্রাণ সহায়তা শেষে প্রত্যাবাসনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে ১৪ এপ্রিল ইয়াঙ্গুন বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে জাহাজটি।