ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবার চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন রুটে কমেছে ঈদ স্পেশাল ট্রেন। গেলো বছর যেখানে তিনটি রুটে চার জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলাচল করেছে সেখানে এবার একটি মাত্র রুটে চলবে এক জোড়া স্পেশাল ট্রেন। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রীদের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম থেকে এবার স্পেশাল ট্রেন বাড়ানোর সুযোগ হচ্ছে না। এজন্য তারা ট্রেনের লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) এবং বগি (কোচ) সংকটকে দায়ী করেছেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্র জানিয়েছে, এবার ঈদে নিয়মিত আন্তনগর ট্রেন আগের মতোই চলবে। তবে এসব ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম থেকে অতিরিক্ত এক জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। এগুলো হলো- চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে চলবে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল-১ ও চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ট্রেন-২।
তবে গেলো ঈদুল ফিতরে চট্টগ্রাম থেকে তিনটি রুটে চার জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে গেলো বছর চট্টগ্রাম থেকে চলাচল করে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে দুই জোড়া, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে এক জোড়া এবং চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটে এক জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন।
এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী কাজী মো. সেলিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রেলে লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) এবং বগি (কোচ) সংকট অনেক বেশি। এ কারণে এবার স্পেশাল ট্রেন বাড়ছে না। বর্তমানে ৮০ থেকে ৮২টি ইঞ্জিন পূর্বাঞ্চল রেলে সচল আছে। তবে ঈদ উপলক্ষে আরও ৭ থেকে ৮টি ইঞ্জিন পাহাড়তলি কারখানায় মেরামতের পর বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তবে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের টাইম টেবিল অনুযায়ী যেসব ট্রেন আছে তা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ১১৩টি ইঞ্জিন প্রয়োজন হয়। একইভাবে বগির (কোচ) সংকটও আছে।’
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এক হাজার ৫০০ কিলোমিটার রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে রেললাইন আছে। এ অঞ্চলে ৫৮টি (২৯ জোড়া) আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এ ছাড়াও মেইল এবং কমিউটার ট্রেন চলাচল করে ৫০টি (২৫ জোড়া)। বর্তমানে যে ট্রেনগুলো আছে সেগুলোতে ঈদে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ৩৫টির মতো বগি যুক্ত হতে পারে। কোন ট্রেনে একটি আবার কোন ট্রেনে দুটি করে বগি যুক্ত হবে। ইঞ্জিন সংকটের কারণে গত বছরের তুলনায় এবার স্পেশাল ট্রেন কমেছে। তবে সম্প্রতি কক্সবাজারে চট্টগ্রাম থেকে দুটি ট্রেন বেড়েছে। প্রয়োজন অনুসারে এসব ট্রেনে বগি যুক্ত হবে।’
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের ভ্রমণের জন্য ১৪ মার্চ থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ওই দিন বিক্রি করা হয় ২৪ মার্চের টিকিট। সর্বশেষ (বৃহস্পতিবার) ২০ মার্চ বিক্রি করা হয় ৩০ মার্চের টিকিট। এ ছাড়াও চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে ৩১ মার্চ বিক্রি করা হবে ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিটি। একইভাবে ঈদের ফিরতি যাত্রার ট্রেনের টিকিট ২৪ মার্চ থেকে বিক্রি শুরু হবে। ওই দিন ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে। ৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৫ মার্চ, ৫ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৬ মার্চ, ৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৭ মার্চ, ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৮ মার্চ, ৮ এপ্রিল বিক্রি করা হবে ২৯ মার্চের টিকিট এবং ৯ এপ্রিল বিক্রি করা হবে ৩০ মার্চের টিকিট।
প্রতিটি আন্তনগর ট্রেনের আসনের অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ দাঁড়িয়ে ভ্রমণের (স্ট্যান্ডিং) টিকিট যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট একজন যাত্রী সর্বোচ্চ একবার কিনতে পারবেন এবং এ ক্ষেত্রে ৪টি আসন সংগ্রহ করতে পারবেন। ঈদযাত্রার টিকিট কেনার পর তা আর ফেরত নেওয়া হবে না।