ভিডিও ভাইরাল

ছেলের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অভিযোগে মাকে লাঠিপেটা, মেম্বার বললেন ‘শাসন করেছি’

ছেলের বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে সালিশে তার মাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করা হয়েছে। সম্প্রতি এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের এবং এটি আরও পাঁচ-ছয় মাস আগের ঘটনা। কিন্তু ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে গতকাল শনিবার থেকে।

জানা গেছে, লাঠিপেটা করা অভিযুক্ত সেই ইউপি সদস্যের (মেম্বার) নাম আইয়ুব আলী। তিনি উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) একটি ফেসবুক আইডি থেকে ১ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। এরপর থেকেই এটি ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, সালিশে ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী আনুমানিক ৩৫ থেকে ৩৬ বছর বয়সী এক নারীকে জিজ্ঞাসা করছেন, তার ছেলে যে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন জিনিস চুরির সঙ্গে জড়িত, তা তিনি জানেন কি না? ওই নারী জবাব দেন, তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না। আবারও ওই নারীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি তার ছেলেকে চুরি করতে বলেছেন কি না? ওই নারী পুনরায় ‘না’ জবাব দিলে সালিশে উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি বলে ওঠেন, সে (ওই নারী) সব জানে। এ সময় ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী বসা থেকে দাঁড়িয়ে একটি লাঠি দিয়ে ওই নারীকে সবার সামনে পেটাতে থাকেন। পাশে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘মহিলা মানুষ, মারার দরকার নাই’। ওই নারীও বলতে থাকেন, তিনি কিছুই জানেন না। এরপরও তাকে পেটাতে থাকেন আইয়ুব আলী।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ‘আমার ছেলের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করা হয়। তারপর আমাকে দোষী করা হয়। মেম্বার আইয়ুব আলী সবার সামনে আমাকে লাঠিপেটা করেন। আমি তখন অপরাধীর মা, তাই কারও কাছে ন্যায়বিচার পাইনি। ঘটনাটি আমি কাউকে জানাতে পারিনি কারণ আইয়ুব আলী মেম্বার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য।’

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, ‘আমার ঘরবাড়ি লুট করা হয়েছে। আমাকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওটা অনেক আগের। তবে আমরা মুখ খুলতে পারতাম না। আমাদের অনেক শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমি সবার শাস্তির দাবি করছি।’

এদিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও ভিডিও পুরোনো বলে জানান ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী। তিনি বলেন, ‘চুরির অপবাদ ছিল সত্য তবে আমি তাদের আত্মীয় হই। সেজন্য শাসন করছি। আর ভিডিওটি পুরোনো। আমি দুইবারের ইউপি সদস্য। আওয়ামী লীগের সমর্থক। পুরোনো ভিডিও দিয়ে বর্তমান সময়ে বিএনপির লোকেরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’

এ বিষয়ে চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বলেন, ‘আপনার কাছে শুনলাম মাত্র। আমি ভিডিওটা দেখিনি। এ ছাড়াও কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। আপনার কাছে থাকলে আমাকে ভিডিওটা দিয়েন। এ ছাড়াও যদি কেউ অভিযোগ করে, তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’