চট্টগ্রাম বন্দরের ডলফিন জেটিতে নোঙর করা তেলের জাহাজে (অয়েল ট্যাংকার) বিস্ফোরণের পর আগুন লাগার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে তিন জনে দাঁড়িয়েছে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি থেকে প্রথমে দুই জন পরে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
মৃতরা হলেন ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা ওই জাহাজের ডেক ক্যাডেট সৌরভ কুমার সাহা (২৩), বিএসসির ফোরম্যান ও চট্টগ্রাম বন্দর থানা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম (৪২) এবং কিশোরগঞ্জ জেলার বাসিন্দা ও শ্রমিক মো. হারুন উর রশিদ (৫০)।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জাহাজে আগুন লাগার ঘটনায় এ পর্যন্ত তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। জাহাজে ক্ষয়ক্ষতি এবং আগুন লাগার কারণ তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তেলবাহী জাহাজে আগুন লাগার ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
এর আগে সোমবার বেলা ১১টায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দুপুর ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের মবিলাইজিং অফিসার কপিল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জলযান কাজ করেছে।
আগুন লাগা জাহাজটি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন। নাম ‘বাংলার জ্যোতি’। এটি একটি অয়েল ট্যাংকার জাহাজ। পতেঙ্গা ইস্টার্ন রিফাইনারির সামনে ডলফিন জেটিতে নোঙর করা ছিল। জাহাজটি সাগরে নোঙর করে রাখা বড় ট্যাংকার থেকে তেল পরিবহন করে জেটিতে নিয়ে আসে। এরপর ইস্টার্ন রিফাইনারিতে তেল সরবরাহ করে। তবে দুর্ঘটনার সময় জাহাজটিতে তেল ছিল কিনা বা থাকলেও কী পরিমাণ ছিল, তা তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানাতে পারেননি।
এ ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। দুপুরে বিপিসির সচিব এটিএম সেলিম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়।