ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার উচালিয়াপাড়া এবং বড্ডপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক আছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উচালিয়াপাড়া গ্রামের মোটরসাইকেলচালক আমান মিয়া মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বড্ডপাড়া গ্রামের ওপর দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বড্ডপাড়া গ্রামের এরশাদ আলীর ব্যাটারিচালিত ভ্যানের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এই খবর উভয় গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে দুপুর ১২টার দিকে দুই গ্রামের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়কের ওপর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে ওই সড়ক দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার উচালিয়াপাড়া এবং বড্ডপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়

উভয় গ্রামবাসী মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করেন। দুই গ্রামের সঙ্গে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজনও সংঘর্ষে জড়ান। এতে অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ এসে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে ৩৬ জনকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং বাকিদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রথমে সরাইল থানা পুলিশ এবং পরে সেনাবাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ চলাকালে সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়কে অন্তত সাড়ে তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।

সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়

সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুর রাকিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যায়। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী। বর্তমানে সবকিছু স্বাভাবিক আছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সংঘর্ষের পর পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ানো ব্যক্তিদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে।’