বন্যায় নোয়াখালীতে প্রাণিসম্পদে ব্যাপক ক্ষতি

নোয়াখালীর ৮টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি প্রতিদিনই অবনতির দিকে যাচ্ছে। একদিকে ফেনী থেকে নেমে আসছে বন্যার পানি অন্যদিকে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে পানি বেড়েই চলছে সদর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলার প্রতিটি এলাকায়। সুবর্ণচর উপজেলার বিভিন্ন স্থানেও কিছুটা পানি বেড়েছে। আমন, আউশ ধান ও শরৎকালীন শাকসবজির ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে প্রাণিসম্পদেও।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, বন্যার কারণে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জেলার বিভিন্ন উপজেলা কয়েক ফুট পানির নিচে প্লাবিত হয়। নিচু এলাকাগুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ। প্রতিদিন বাড়তে থাকে পানি, যা বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। বন্যায় প্রাণিসম্পদে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সদর উপজেলায়। এখন পর্যন্ত বন্যার পানিতে মারা গেছে প্রায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩১৪টি গৃহপালিত পশুপাখি। যার মধ্যে রয়েছে ২৮টি গরু, ১টি মহিষ, ১২টি ছাগল, ৩টি ভেড়া, ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭০টি মুরগি ও ৫০০ হাঁস। পানিতে ভেসে গেছে ৪৮ হেক্টর গোচারণভূমি, ১৫৪ টন দানাদার খাদ্য, ৩৪৬ টন খড় ও ৩৬৬ টন কাঁচাঘাস। যেখানে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৪৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।

এ ছাড়াও জেলার ১০৮টি গরুর খামার নষ্ট হয়েছে। যেখানে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। ১৯৬টি হাঁস-মুরগির খামারে ক্ষতি হয়েছে ৫ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার ৩০০টাকা।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর এলাকার নিহা ও এনপি পোলট্রির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ নূর উদ্দিন বলেন, ‘গত ২২ আগস্ট বন্যার পানি ডুকে খামারের ১৭ দিন বয়সী ৮ হাজার মুরগি মারা যায়। যার বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া গুরুর খামারে ৩টি বাছুর ও ৭টি বড় গরু মারা যায়। যার বাজারমূল্য প্রায় ৮ লাখ টাকা।’ তিনি ছাড়াও তার আশপাশের রাণী পোলট্রি, মিয়া পোলট্রি, আশেক পোলট্রি, নবাব পোলট্রি ও নোভা পোলট্রিসহ প্রায় ১০টি পোলট্রি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু এতদিন পার হলেও প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে কোনও কর্মকর্তা তাদের খোঁজখবর নেননি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ৮টি উপজেলায় প্রাণিসম্পদে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে ক্ষতি অপূরনীয়। পুরো জেলায় গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি মানুষের ত্রাণের পাশাপাশি গোখাদ্য সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানান।