নোয়াখালীর কবিরহাটের সুন্দলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. একরামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ত্রাণসামগ্রীর ৬০০ প্যাকেট ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় বিএনপি নেতা একরামের অনুসারীরা এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও আরেকজনকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনী ও কবিরহাট থানার একদল পুলিশ ছিনিয়ে নেওয়া ত্রাণগুলো উদ্ধার করে। এর আগে, একই দিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের কালামুন্সি বাজারে এই ঘটনা ঘটে। ত্রাণ উদ্ধারকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটক মো. সৌরভ (১৮) উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দই বাড়ির জাহের হোসেনের ছেলে।
হামলার শিকার শিক্ষার্থী তাসরিফ-উর রহমান ওরফে নিহাদ অভিযোগ করে বলেন, ‘উপজেলার কালামুন্সি বাজার এলাকার শিক্ষার্থীরা স্থানীয় বন্যাদুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য ঢাকা থেকে ৬০০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করেন। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ত্রাণসামগ্রীর প্যাকেটগুলো নিয়ে কালামুন্সি বাজারে আসেন। তখন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একরাম নানা অজুহাতে ছাত্রদের ত্রাণগুলো ছিনিয়ে নিয়ে সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখেন। এ সময় একরামের অনুসারী ছাত্রদল নেতা সোহেলের নেতৃত্বে সৌরভ, রিপাত, নুমান ও বাপ্পী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মো. মাইনউদ্দিন আকাশ (১৬) নামে এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও নিহাদ (১৬) নামে আরেকজনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। পরে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে আসে। একপর্যায়ে তারা শিক্ষার্থীদের ত্রাণসামগ্রী উদ্ধার করে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. একরাম এ ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ত্রাণগুলো উদ্ধার করেছে। এরপর যাদের ত্রাণ তাদের ফেরত দেওয়া হয়েছে। তারা তাদের লোক দিয়ে ত্রাণ সামগ্রীগুলো বিতরণ করে। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, সেখানে ১৪০-১৫০টি ত্রাণের প্যাকেট ছিল।’
কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযুক্ত বিএনপি নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা হয়েছে। দলীয় বৈঠকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই ত্রাণ বিতরণের সঙ্গে কয়েকজন ছাত্রলীগের ছেলে জড়িত ছিল। যারা ৫ আগস্টের আগের আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে। আসলে ছোট বিষয়টিকে বড় করা হয়েছে।’
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ন কবির বলেন, ‘খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের ত্রাণসামগ্রীগুলো উদ্ধার করে ফেরত দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’