সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সুপারিশ ও চাপে নিজ নির্বাচনি এলাকা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) নেওয়া ‘সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিবেশ ছাড়পত্র বাতিল করেছে পরিবেশ অধিদফতর। সোমবার (১৯ আগস্ট) অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় প্রকল্পটির ছাড়পত্র বাতিল করা হয়।
পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (পরিবেশগত ছাড়পত্র) মাসুদ ইকবাল মো. শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজকে অনুষ্ঠিত এক সভায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নেওয়া ‘সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিবেশ ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি এ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
এর আগে ১৩ আগস্ট জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ পাহাড় ও জলাশয় বেষ্টিত উল্লেখিত এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন করলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবকে চিঠি দিয়েছে। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সদস্য বিজয় কুমার মন্ডল এ চিঠি দেন। চিঠিতে প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ৯ একর জায়গায় পাহাড়, টিলা ও জলাভূমি ছাড়া সমতল নেই বলে উল্লেখ করা হয়।
গত ৬ জুন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শর্ত সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদন করেন। এর আগে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদের আধা সরকারি সুপারিশের (ডিও লেটার) পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিল।
জাগৃক সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্প এলাকার ৭০ শতাংশ পাহাড় ও ৩০ শতাংশ জলাধার হওয়ায় বিভিন্ন সংস্থার আপত্তিতে প্রকল্পটি প্রথমে বাতিল করা হয়। তবে হাছান মাহমুদের চাপে আগের মতামত বাদ দিয়ে নতুন করে প্রকল্প অনুমোদন করানো হয়। ২০২০ সালের মার্চে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। প্রকল্পে ১৬ দশমিক ১৯ একর জমি ধরা হলেও ১৪ দশমিক ১৯ একরে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৪১ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয় ভূমি অধিগ্রহণে।
সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নেজামুল হক মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রকল্পটি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইছাখালী এলাকায় বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এ প্রকল্পে আমাদের মতামত ছিল না। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এ প্রকল্প নেওয়া হয়। আবার আমাদের সুপারিশে প্রকল্পটি বাতিল করা হচ্ছে।’