আন্দোলনকে ঘিরে চাঁদপুরে পৌর ও সড়ক ভবনে আগুন

চাঁদপুর শহর ও হাজীগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আগুন দেওয়া হয়েছে হাজীগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ে এবং চাঁদপুর সড়ক ও জনপথের অফিসে। এতে বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়ে গেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনির বাসার নিচে থাকা কয়েকটি মোটরসাইকেল। রবিবার (৪ আগস্ট) চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ও হাজীগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে।

দিনব্যাপী সংঘর্ষে আন্দোলনকারী, সরকার দলের নেতাকর্মী, পুলিশ সদস্য, সাংবাদিকসহ দুই শতাধিক  আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাওয়াদুর রহমানসহ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। বিভিন্ন স্থানে নিহতের গুজব ছড়ালেও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, সকাল ১০টার পর থেকে আন্দোলনকারীরা চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ১১টার দিকে শত শত আন্দোলনকারী লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে শহরের ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসতে চাইলে আন্দোলনকারীরা তাদের ধাওয়া দেন। এ সময় দুই পক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে শুরু হয় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এ সময় ইটের আঘাতে আহত হন বাংলা ট্রিবিউন ও দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি ইব্রাহীম রনিসহ দুই জন সাংবাদিক। 
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলাকালে পুলিশ অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করে। তবে বিকাল ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হন।

চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, সংঘর্ষে আহত হয়ে সকাল থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ৬১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন এবং ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ছয় পুলিশ সদস্য ও বেশিরভাগই সরকার দলের নেতাকর্মী।

চাঁদপুর সড়ক বিভাগের একজন প্রকৌশলী দাবি করেন, দুপুরের পর আন্দোলনকারীরা অফিসের নিচে থাকা গাড়িগুলোতে আগুন দেয়। এ সময় আমরা প্রাণে বাঁচতে অফিসের ছাদে উঠি। কিন্তু সেখানে তারা আমাদের মারধর করে। আগুনে আমাদের অন্তত পাঁচটি গাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এদিকে হাজীগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মেয়রের গাড়িসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল। এ উপজেলায় দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন শতাধিক।

হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ স ম মাহবুব উল আলম লিপন বলেন, সকালে তারা অফিসে আগুন দেয়। এ সময় আমি এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটকা পড়ে। আমাকে দোতলার জানালার গ্রিল ভেঙে উদ্ধার না করলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যেতাম।

তার দাবি, তারা পৌরসভার ছোটবড় কমপক্ষে ২৬টি গাড়ি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দিয়েছে। অফিসের বিভিন্ন ফ্লোরে আগুন দিয়েছে। পুরো অফিস শেষ করে দিয়েছে।