রায়পুরে চার মাসে অর্ধশত মোটরসাইকেল চুরি, জিডি করেও হয় না উদ্ধার

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রায় প্রতিদিন মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। আতঙ্ক ও শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় মোটরসাইকেল মালিকেরা। চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও কোনও কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।

রবিবার (৩০ জুন) রাত ৮টার সময় চরবংশী স্টিল ব্রিজের সামনে মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে আবদুর রহিমের, চরআবাবিলের বালুধুম এলাকায় মুন্সি বাড়ির সামনে থেকে প্রবাসী মন্জুর রহমান মুন্সি ও তুলাতুলি এলাকা থেকে আলী আজগরের মোটরসাইকেলটি চুরি হয়ে যায়। তারা বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে।

স্থানীয়দের দাবি, গত চার মাসে (মার্চ-জুন) রায়পুর শহরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় অর্ধশত মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ চুরির ঘটনাই ঘটেছে দিনের বেলায়। চুরি যাওয়া এসব মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ চোরদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে রায়পুরের নতুন বাজার এলাকায় ব্যবসায়ী সেলিমের বাসার নিচ থেকে একটি জিকসার মোটরসাইকেল চুরি করে দুই ব্যক্তি। চুরির ঘটনাটি সিসিটিভির ক্যামেরাতেও ধরা পড়ে। এই ঘটনায় থানায় একটি ডায়েরি করেছেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও চোর চক্রকে এখনও ধরা হয়নি।’

শুধু সেলিমই নন, মার্চ ও এপ্রিল মাসে বাস টার্মিনাল জামে মসজিদের সামনে থেকে শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের ডিসকভারি, সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে থেকে চরপাতা গ্রামের মিরাজ হোসেনের, চরমোহনা ইউপির বাবুরহাট বাজার থেকে জালাল উদ্দিন রানা ও ফরিদ আহাম্মেদের, বাঁশতলা থেকে চরমোহনা গ্রামের মো. রুবেলের পালসার, শেখ ফরিদের ডিসকভার ও রাকিব হোসেনের জিকসার মোটরসাইকেলটি রায়পুর শহরের আলিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে চুরি হয়।

গত ২৫ মে উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদে নামাজ পড়ার সময় একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা কবিরের পালসার মোটরসাইকেলটি চুরি হয়। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পৌরসভা কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও শহরের মেস্তুরি বাড়ির বাসিন্দা আনিসুল হকের বাসার নিচ থেকে কালো ও লাল কালারের দুটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। চরপাতা গ্রামের ব্যবসায়ী জগলুল হায়দারের বাড়ির নিচে থেকে ৫টি তালা ভেঙে দুটি অ্যাপাচি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে জগলুল হায়দার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মোটরসাইকেল প্রয়োজনীয় শখের বাহন। আমার বাসা থেকে দুটি মোটরসাইকেল চুরি হয়ে গেছে। প্রশাসনের উচিত ছিল বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা।’

বামনী গ্রামের হিমেল খান হিমুসহ তিন জন সাধারণ মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘গত দুই মাসে আমাদের তিনটিসহ রায়পুরে যে পরিমাণ মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে, তা অকল্পনীয়। আমরা সাধারণ বাইকার যারা আছি, তারা দৈনন্দিন কাজের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করি। মোটরসাইকেল কোথাও পার্ক করে শান্তি পাই না। আতঙ্কে থাকি যে, কখন কে নিয়ে যায়। প্রশাসন এই জায়গায় কেন ব্যর্থ হয় বুঝতে পারছি না। কেন এদের ধরতে পারছে না?’

এ ব্যাপারে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, ‘দুই জন ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ করেছেন। মোটরসাইকেল চোর চক্রকে ধরার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ ছাড়াও বিশেষ অভিযান চলমান আছে।’