তরুণীকে ধর্ষণ: পাহাড়িকা ও উদয়ন ট্রেনে এস এ করপোরেশনের খাবার সরবরাহ স্থগিত

সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে এক তরুণীকে (১৯) ধর্ষণের অভিযোগ উঠার পর ওই ট্রেনে খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস এ করপোরেশনের কার্যক্রম স্থগিত করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। উদয়ন এক্সপ্রেসের পাশাপাশি পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনেও প্রতিষ্ঠানটির খাবার সরবরাহ স্থগিত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুটি খাবার সরবরাহ করে আসছিল এস এ করপোরেশন।

বুধবার (২৬ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের খাবার বগিতে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এস এ করপোরেশনের তিন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। একই ঘটনায় ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) আব্দুর রহিমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

দুটি ট্রেনে খাবার সরবরাহ স্থগিত করার বিষয়টি বুধবার রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকী। 

এদিন সন্ধ্যায় আবু বক্কর সিদ্দিকীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে দুই ট্রেনে খাবার পরিবেশন স্থগিত করার কথা জানানো হয়। খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস এ করপোরেশনের মালিক মোহাম্মদ শাহ আলম কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার শ্রীয়াং গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে। 

আবু বক্কর সিদ্দিকীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘২৫ জুন দিবাগত রাত ১০টায় সিলেট স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে ক্যাটারিং সার্ভিস প্রদানের জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত কর্মচারী শরিফ গং কর্তৃক একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে আপনার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত ক্যাটারিং সার্ভিস পরিচালনা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।’

গ্রেফতারকৃত খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মী হলো মো. জামাল (২৯), মো. শরীফ (২২) ও রাশেদুল ইসলাম (২৮)। চলন্ত ট্রেনটি ওই সময় লাকসাম এলাকা পার হচ্ছিল। ভোরে এই ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় সন্ধ্যায়। উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেট থেকে মঙ্গলবার রাত ১০টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। চট্টগ্রাম পৌঁছে বুধবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে।

রেলওয়ে পুলিশ জানায়, ওই তরুণী সিলেট থেকে উদয়ন এক্সপ্রেসে উঠে খাবার বগিতে অবস্থান করেন। ওই সময় খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মী তাকে প্রথমে উত্ত্যক্ত এবং পরে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী সিলেট গিয়েছিলেন ভাইয়ের বাসায়। তার বাড়ি বান্দরবানে। বাড়ি যাওয়ার জন্যই চট্টগ্রামে আসছিলেন।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শহীদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উদয়ন এক্সপ্রেসের খাবারের বগিতে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। ভুক্তভোগী তরুণী পুলিশের হেফাজতে আছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হবে। ধর্ষণের ঘটনায় তিনি মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। দুপুরে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রেলওয়ের চট্টগ্রাম স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় ট্রেনের গার্ড আবদুর রহিমকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’