মামুনুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে তার কথিত স্ত্রীর করা ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (জেলা জজ) বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আবদুর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামুনুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ছিল। সাক্ষী উপস্থিত থাকলেও মামুনুল হক আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।’ 

আসামি পক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ধর্ষণ মামলায় মামুনুল হক জামিনে আছেন। মঙ্গলবার মামলার সর্বশেষ সাক্ষী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার তৎকালীন পরিদর্শক শফিকুল ইসলামের চতুর্থ দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তবে মামুনুল হক অসুস্থ থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। এই সংক্রান্ত হাসপাতালের কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এরপরও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারক।’ 

এর আগে গত ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল ধর্ষণ মামলায় মামুনুল হকের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান ছিল। তারই অংশ হিসেবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের চতুর্থ দফায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ছিল। এ নিয়ে এই মামলায় ৪০ সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ মোট ২৬ সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে একটি রুমে কথিত স্ত্রীসহ হেফাজতে ইসলামের সে সময়ের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে মামুনুল ও তার কথিত স্ত্রীকে ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার ১৫ দিন পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ।

রয়েল রিসোর্ট–কাণ্ডের ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ বছরের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে ওই নারী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে অভিযোগ গঠন করা হয়।