সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী পরিবহন, ‘জনসেবা’ বলছেন চালক

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ লাঘবে চালু হয়েছিল ‘স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স’। যার মাধ্যমে শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিয়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছে লক্ষ্মীপুর জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। রোগী বহনের ব্যতিক্রম এ উদ্যোগের ফলে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কৃতও হয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ।

এই অ্যাম্বুলেন্সগুলো পরিচালনা করেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানগণ। তবে কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানের কর্মকাণ্ডে প্রশ্নবিদ্ধ হয় অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসটি। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ‘ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক’ কাজে ব্যবহার করছেন অ্যাম্বুলেন্সগুলো। এতে ভেস্তে যাচ্ছে দেশব্যাপী প্রশংসা কুড়ানো স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের উদ্যোগটি।

শনিবার (২২ জুন) দেখা যায়, স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্সে করে জেলা শহরের ঝুমুর এলাকা থেকে ঢাকাগামী যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্সটি সদর উপজেলার ১৬ নম্বর শাকচর ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন। এ সময় প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে ভাড়া তোলেন অ্যাম্বুলেন্সচালক।

এর আগে, কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ও রায়পুরের দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, অনেক ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করছেন ব্যক্তিগত কাজে। কেউবা রোগী বহন না করে নানা অজুহাতে বসিয়ে রাখছেন অ্যাম্বুলেন্সটি।

অভিযুক্ত অ্যাম্বুলেন্সচালক নুরুল আমিন বলেন, ‘ঈদপরবর্তী সড়কে ঢাকাগামী প্রচুর যাত্রী। কিন্তু সে তুলনায় গাড়ি নেই। তাই অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী নিয়েছি। কারণ, প্রশাসন আমাকে অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছে জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য।’ তবে যাত্রী পরিবহনে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকের অনুমতি রয়েছে কি? এমন প্রশ্নের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি ওই চালকের কাছ থেকে।

শাকচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী পরিবহন বিষয়টি দুঃখজনক। ঘটনাটি জানার পরই চালককে ফোন করেছি। নিষেধ করা হয়েছে রোগী ছাড়া অন্যদের বহন করতে। তা ছাড়া আমি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় আছি। পরিষদে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের মুঠোফোনে কল দিয়েও কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। তবে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বপ্নযাত্রা অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী পরিবহনের দায়ে অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’