‘রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউরই ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সেই ইফাতের বাবা’

বর্তমানে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে এবারের কোরবানির ঈদে কেনা একটি ছাগলকে ঘিরে। পশুটি যে কিনেছে সেই মুশফিকুর রহমান ইফাতকে বলা হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। যদিও তিনি বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে জানিয়েছেন, ইফাত নামে তার কোনও ছেলে নেই।

এবার সেই আলোচনায় জল ঢাললেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। তিনি জানিয়েছেন, ইফাত তার মামাতো বোনের সন্তান। আর রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানই তার বাবা। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) মুঠোফোনে বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন।

নিজাম হাজারী বলেন, ‘ইফাত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে। ধারণা করছি, রাগ করে মতিউর রহমান ইফাতের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন। মতিউর রহমান নিয়মিত দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।’

কোরবানি উপলক্ষে ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচিত হয়েছেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক তরুণ। এরপর বিষয়টি অন্তর্জালে ভাইরাল হলে অনেকেই তাকে মতিউরের ছেলে বলে দাবি করেন। প্রশ্ন ওঠে, সরকারি চাকরি করা বাবার ছেলে কীভাবে এত দামের ছাগল কিনলেন?

যদিও ইফাতকে নিজের ছেলে বলে অস্বীকার করেছেন মতিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল ওই ছেলেকে (ইফাত) আমি চিনি না। সে আমার সন্তান নয়। আমার নাম জড়ানোয় আমি ও আমার পরিবার অনেক বিব্রত।’

ছাগলটি কেনা প্রসঙ্গে মোহাম্মদপুরে অবস্থিত ‘সাদিক অ্যাগ্রো’ ফার্মের কর্ণধার মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন জানান, আলোচিত সেই তরুণ শুধু ১ লাখ টাকা দিয়ে ছাগলটি বায়না করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পুরো টাকা পরিশোধ করে ছাগলটি খামার থেকে বাড়িতে নিয়ে যাননি।

সাদিক অ্যাগ্রোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, যে ছাগলের দাম নিয়ে এত জল্পনা-কল্পনা, তা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতের ছাগল। এ জাতের নাম ‘বিটল’ এবং বাংলাদেশে এটি এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ছাগল।

আলোচিত ওই ধূসর বাদামি রঙের ছাগলটির উচ্চতা ৬২ ইঞ্চি। প্রায় দুই মাস আগে এটি যশোরের একটি হাট থেকে ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় কেনা হয় বলে দাবি করেছে সাদিক অ্যাগ্রো। তারা বলছে, ইফাত ছাগলটি কেনার জন্য ১ লাখ টাকা বায়না দিয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার পর তিনি আর সেটি নেননি।

ঘটনার সূত্রপাত হয় ঈদের সপ্তাহখানেক আগে। ১৫ লাখ টাকা দামের ছাগল ১২ লাখ টাকায় কিনে ভাইরাল হন ইফাত। পরে জানা যায়, তার বাবা রাজস্ব কর্মকর্তা। সরকারি চাকরি করে কীভাবে এত দামের ছাগল কিনলেন তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

রাজধানীর ধানমন্ডি ৮ নম্বর রোডের ইমপেরিয়াল সুলতানা ভবনের পঞ্চম তলায় থাকেন ইফাত। ইতোমধ্যে চাউর হয়েছে, এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমান দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর নাম লাইলা কানিজ। বর্তমানে তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান এই মুশফিকুর রহমান ইফাত।