কক্সবাজারে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। কক্সবাজারের তিনটি উপজেলার মধ্যে পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলার নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ হলেও নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলায় কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই চেয়ারম্যান সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। অপর এক বিচ্ছিন্ন ঘটনায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রমতে, কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম পোকখালী ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ওই এলাকার সফুর আলম (৩৫) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। নিহত যুবক ওই এলাকার নুর উদ্দিনের ছেলে ও টেলিফোন প্রতীকের সমর্থক বলে জানা গেছে। টেলিফোন প্রতীকের সমর্থক দেলোয়ার নামক এক ব্যক্তিকে আটক করে রাখেন মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকরা- এ খবরে তাকে বাঁচাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতের শিকার হন নিহত সফুর আলম।
দেলোয়ার জানান, তিনি একটি বাড়িতে খাবার খেতে গেলে সেখানে তাকে মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা আটকে রাখেন। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধারে ছুটে গেলে সেখানে সফুর আলমকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ৪টা ২০ মিনিটের সময় হাসপাতালে নিয়ে আসা গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ড. সাজ্জাদুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
টেলিফোন প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা জানিয়েছেন, সকাল থেকে মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী সমর্থকেরা উগ্রতা দেখাচ্ছিল। বিকাল নাগাদ তারা টেলিফোনের এক সমর্থককে ছুরিকাঘাত করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঈদগাঁও হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঈদগাঁও থানার ওসি শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, ছুরিকাঘাতে একজন নিহতের খবর শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ যাচ্ছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, আনারস প্রতীকের সমর্থক সৈয়দ আকবরকে মারধরের প্রতিবাদে ঈদগাঁও স্টেশনে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন কর্মী-সমর্থকরা। পরে পুলিশ ও র্যাবের উপস্থিতিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঈদগাঁও উপজেলা
কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলায় পাঁচ ইউনিয়নের মধ্যে ঈদগাঁও, ইসলামপুর, পোকখালী, ইসলামাবাদ ও জালালাবাদ নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা সংখ্যা ৮৮ হাজার ৭৬০ জন। পুরুষ ভোটার ৪৮ হাজার ২৪৮ ও মহিলা ভোটার ৪০ হাজার ৫১২ জন। ৩৬ ভোটকেন্দ্রে বুথ সংখ্যা ২৬৮টি। নির্বাচনে পাঁচ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, তিন জন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ও পাঁচ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চকরিয়া উপজেলা
চকরিয়া উপজেলা একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। মোট কেন্দ্র ১১৪টিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে ভোট নেওয়া হয়েছে। উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলম (ঘোড়া), বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী (দোয়াত-কলম), আবদুল্লাহ আল হাসান সাকিব (আনারস) ও বদিউল আলম (মোটরসাইকেল)।
পেকুয়া উপজেলা
পেকুয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চার প্রার্থী। তারা হলেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু (ঘোড়া), মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম (দোয়াত কলম), উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রুমানা আকতার (আনারস) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম (মোটরসাইকেল)। সাত ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলার ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৩৫ হাজার ৩০০ জন।