আ.লীগ প্রার্থীকে ভোট দিতে ৪৯২ জনের কার্ড জব্দ করেছেন চেয়ারম্যান, অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর

নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোরশেদ আলমকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৪৯২ জন সুবিধাভোগীর কার্ড জব্দ করা হয়েছে। কার্ডগুলো স্থানীয় মেম্বারদের মাধ্যমে সংগ্রহ করে নিজের কাছে রেখেছেন সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন দুলু।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদকের কাছে কার্ড জব্দের বিষয়টি স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন দুলু। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ওয়ার্ডের মেম্বারের মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৪৯২ জন সুবিধাভোগীর কার্ড সংগ্রহ করে আমার কাছে রেখেছি। কার্ডধারীরা সরকারের দেওয়া ১০ টাকা মূল্যে ৩০ কেজি করে চাল পেয়ে থাকেন। গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে তারা চাল পেয়েছিলেন। আগামী এপ্রিল এবং মে মাসে আবারও পাবেন। যেহেতু তারা সরকারের সুবিধা গ্রহণ করেন সেহেতু তাদের নৌকায় ভোট দিতে হবে। নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে আমরা এমপি সাহেবের (মোরশেদ আলম) সঙ্গে বৈঠক করেছি। ওয়ার্ডভিত্তিক কার্ডধারীদের সঙ্গেও বৈঠক করবো। যারা নৌকার প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবেন আমরা তাদের কার্ড ফিরিয়ে দেবো। এসব বিষয় এমপি সাহেবও জানেন।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেনবাগের ৯টি ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা, অম্বরনগর, বারগাও ও নাটেশ্বর ইউনিয়ন নিয়ে নোয়াখালী-২ আসন গঠিত। আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও সাত জন প্রার্থী। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভোট নিশ্চিত করতে চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন দুলু তার ৯টি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের (মেম্বার) মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৪৯২ জনের কার্ড জব্দ করেছেন।

কার্ডধারী হারুন অর রশিদ, আবদুল করিম ও আবুল হাশেম জানান, মেম্বাররা এসে আমাদের কাছ থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড নিয়ে গেছেন। বলেছিলেন, চেয়ারম্যান নিতে বলছেন, তাই তারা নিয়ে গেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর এই অভিযোগ এখনও আমি দেখিনি। তবে একজন চেয়ারম্যান এভাবে সরকারি সুবিধাভোগী কারও কার্ড জব্দ করতে পারেন না। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’