চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় মারা গেলো সিংহী ‘নোভা’

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে দর্শনার্থীদের আনন্দ দিয়ে আসা সিংহী ‘নোভা’ অবশেষে মারা গেছে। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় অসুস্থ হয়ে শনিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৮টায় সিংহী নোভা মারা যায়। মারা যাওয়া সিংহীর বয়স ১৮ বছর চার মাস। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ও চিকিৎসক শাহাদাৎ হোসেন শুভ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ৬ মাস ধরে অসুস্থ ছিল সিংহী নোভা। গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে নোভা খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। শুধু ওষুধ ও স্যালাইনের মাধ্যমে সিংহীটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সিংহী নোভা মারা যায়।

চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, নোভার জন্ম চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। ২০০৫ সালের ১৬ জুন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া দুটি সিংহীর নাম রাখা হয় ‘বর্ষা’ ও ‘নোভা’। জন্মের কিছুদিন পর তাদের মা ‘লক্ষ্মী’ এবং ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মারা যায় বাবা ‘রাজ’। দীর্ঘ ১১ বছর নিঃসঙ্গ কাটানো নোভার জন্য ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রংপুর চিড়িয়াখানা থেকে আনা হয় সিংহ ‘বাদশা’কে। বিনিময়ে রংপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ‘বর্ষা’কে। বাদশাকে কিছুদিন পৃথক রাখার পর ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর মহাধুমধামের মধ্য দিয়ে বাদশা ও নোভাকে একই খাঁচায় রাখা হয়। তখন ওই আয়োজন বাদশা-নোভার বিয়ে বলে প্রচার পায়। এর মধ্যে গত বছরের ১১ নভেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যায় বাদশা।

চিকিৎসক শাহাদাৎ হোসেন শুভ জানান, সাধারণত সিংহ-সিংহীর গড় আয়ু ১৫ থেকে ১৭ বছর। সিংহী নোভার বয়স ১৮ বছর চার মাস। সিংহ-সিংহী আড়াই বছর বয়সেই প্রজননক্ষম হয়। তিন বছরের মধ্যে বাচ্চা প্রসব করে। ১২ বছর পর তাদের প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ প্রাণী সর্বোচ্চ পাঁচবার শাবকের জন্ম দেয়। চলতি বছরের ১৬ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয় এক জোড়া সিংহ।

১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন পরিচালিত এ চিড়িয়াখানায় বর্তমানে বাঘ ছাড়াও রয়েছে- জেব্রা, ভালুক, সিংহ, হরিণ (চিত্রা, সাম্বার, মায়া) উল্লুক, বানর, মেছো বিড়াল, চিতা বিড়াল, অজগর, বাঘডাসা, উটপাখি, ইমু পাখি, গয়াল, কুমির, ময়ূর, ঘোড়া, বক, টিয়াসহ ৬৮ প্রজাতির ৬২০টি পশুপাখি।