বাংলাদেশি যুবকের মাথা-বুকে একে একে ৬টি গুলি করলো আফ্রিকান সন্ত্রাসীরা

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রি-স্টেট প্রদেশের বুসাবেলোতে দেশটির সন্ত্রাসীদের গুলিতে রিগান ইসলাম (৩৫) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের ছোড়া তিন গুলি তার মাথায় ও ছয়টি গুলি শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে।

বাংলাদেশ সময় সোমবার (২৫ জুন) রাত ৮টার দিকে বুসাবেলোতে এলাকায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রিগান ইসলাম নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পশ্চিম শ্রীনদ্দি গ্রামের শেখ উলাল মিয়ার বাড়ির তাজুল ইসলামের ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে বড় ছিলেন। তার তিন বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

নিহতের ছোট ভাই ফাহিম মাহমুদ জানান, পরিবারের বড় ছেলে হওয়ার সুবাদে জীবিকার তাগিদে প্রায় ১৫ বছর আগে আফ্রিকায় পাড়ি জমান। সেখানে নিজের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। সবশেষ ২০২১ সালে দেশে আসার পর প্রায় পাঁচ মাস ছুটি কাটিয়ে পুনরায় আফ্রিকা যান। বাংলাদেশ সময় সোমবার রাতে গাড়িযোগে মালামাল নিয়ে দোকানের সামনে আসেন।

তিনি জানান, গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আগে থেকে ওতপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এতে তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ছয়টি গুলি লাগে। ঘটনাস্থলেই মারা যান।

নিহতের পরিবারের আরেক সদস্য মো. শিপন বলেন, সোমবার রাত ১১টার দিকে রিগানের চাচা মোবাইলে মৃত্যুর বিষয়টি জানান। রিগানের চাচা, ফুফাতো ভাইসহ আত্মীয়-স্বজনদের অনেকেই আফ্রিকায় থাকেন। সবকিছু ঠিক থাকলে দুই মাস পর দেশে আসার কথা ছিল রিগানের। দেশে আসার পর ছোট ভাই ফাহিমকে আফ্রিকা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড সবকিছু শেষ করে দিলো।

বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি শোনার পর স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে পরিবারটির খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। আমরা পরিবারের সহযোগিতায় তাদের পাশে আছি।

এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা-মা। বিয়ের মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন রিগানের স্ত্রী। নিহতের লাশ দ্রুত দেশে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন পরিবারের সদস্যরা।