পাঁচ কারণে প্রকাশ্য বিরোধে খাগড়াছড়ির স্থানীয় সরকার পরিষদের দুই সংস্থা-খাগড়াছড়ি পৌরসভা এবং গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান না হলে এক সংস্থার বিরুদ্ধে আরেক সংস্থা মামলার হুমকি দিয়েছে। জনগণকে পাশে নিয়ে মামলা মোকাবিলার ঘোষণাও দিয়েছে অন্য সংস্থা।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জ্ঞান রঞ্জন ত্রিপুরার নেতৃত্বে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলম প্রথমত, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ১০-১৫টি গ্রামকে পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত করার পাঁয়তারা করছেন। দ্বিতীয়ত, বেআইনিভাবে গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের জায়গায় পৌর টোল কেন্দ্র স্থাপন ও টোল আদায় করতে চাচ্ছেন। তৃতীয়ত, পৌরসভার বাসিন্দাদের সকল ময়লা-আবর্জনা গোলাবাড়ি ইউনিয়নের আলুটিলা এলাকায় ফেলছেন এবং পরিবেশ দুষণ করছেন। চতুর্থত, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করে ইউনিয়ন পরিষদের আয় কমিয়ে দিয়েছেন। এবং পঞ্চমত সালিশসহ ইউনিয়ন পরিষদের অর্ন্তভুক্ত বিভিন্ন বিষয়ে অযথা ও অহেতুক হস্তক্ষেপ করছেন।
পৌরসভা মেয়রের এসব বেআইনি কাজের কারণে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েও অনেকে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করতে পারছেন না।
জ্ঞান রঞ্জন ত্রিপুরা বলেন, ২০১০ সাল থেকে এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক, উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার পরিষদ), সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়রকেও একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। উল্টো খাগড়াছড়ি পৌরসভার এসব বেআইনি কার্যক্রম আরও বেড়ে যাচ্ছে। পৌরসভা মেয়র যদি দ্রুত এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ না করেন তাহলে জনস্বার্থে মহামান্য হাইকোর্টে এসব বন্ধ চেয়ে রিট এবং ক্ষতিপূরণের জন্য মামলা করবো।
তিনি আরও বলেন পৌরসভা তার এখতিয়ারের মধ্যে থেকেই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। ট্যাক্স-টোল আদায়, ময়লা-আবর্জনাসহ রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আবর্জনা ডাম্পিং করছে। গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের একাংশ পৌরসভায় অন্তর্ভূক্ত হতে ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। সকল নাগরিক উন্নত জীবন ও সেবা পাওয়ার জন্যই আবেদন করেছে এবং এসব বিষয়ে মন্ত্রণালয়ই দেখবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আইনের আশ্রয়, মামলা ও মোকদ্দমার হুমকি তাকে দেখিয়ে লাভ নেই। তিনিও পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবেন।
জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, টোল কেন্দ্র নিয়ে যে সমস্যা তা সমাধান করা হয়েছে। বর্তমানে পৌরসভার টোল কেন্দ্র পৌর এলাকার মধ্যেই আছে। উভয় সংস্থার অন্য ইস্যুগুলোর যেগুলো প্রশাসন সমাধান করতে পারবে, তা প্রশাসন দেখবে। অন্যগুলো মন্ত্রনালয়সহ সরকারের ব্যাপার।