এক নবজাতকের স্বজন রোকসানা আক্তার জানান, নবজাতক ওয়ার্ডে তার সন্তানকে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা ওয়ার্মারে রাখার জন্য বলেন। কিন্তু, নার্সরা জানান, তিনটি ওয়ার্মারের মধ্যে দুইটিই নষ্ট।
এই প্রসঙ্গে নবজাতক ওয়ার্ডের ইনচার্জ শাহানাজ বেগম জানান, মায়ের গর্ভ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্ম নেওয়া, ওজন কম, শারীরিক গঠন তুলনামূলক ছোট ও জন্মের পর শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এদিকে শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর পরিমাণও বেড়েছে। এই ওয়ার্ডে চিকিৎসায় ব্যবহার করা তিনটি ওয়ার্মার ও তিনটি ফটো থেরাপি মেশিনের মধ্যে মাত্র দুইটি যন্ত্রাংশ কাজ করছে। চারটি ইনকিউবেটর থাকলেও এখন একটিও নেই। নবজাতক রোগীর তুলনায় যন্ত্রাংশ ও লোকবল সংকট থাকায় ঠিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
শিশু ও নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. মো. আজিজুল হোসেন বলেন, ‘শীত এলে শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়। তাদের সেবা দিতে আমাদের বিপাকে পড়তে হয়। প্রয়োজনীয় মেশিন ও যন্ত্রাংশের অনেক সংকট। নবজাতক ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ৭-৮টি শিশু জন্ম নেয়। শিশুর মৃত্যু রোধে স্ক্যানো ইউনিট চালু ও ওয়ার্মার এবং এনআইসিইউসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আনার চেষ্টা করছি।’
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান বলেন, ‘৭৯ জন জনবলের সংকট রয়েছে। মঞ্জুরিকৃত ৭০৯ জন জনবলের মধ্যে রয়েছে ৬২৯ জন। দীর্ঘদিন শুন্য রয়েছেন ৭৯ জন। তারমধ্যে প্রথম শ্রেণির ৩৪ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির (নার্সিং) ৩১ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির (নন মেডিক্যাল) ২ জন, তৃতীয় শ্রেীণর ৭ জন ও চতুর্থ শ্রেণির ৫ জন। আইসিইউ, স্ক্যানো ইউনিট চালুর জন্য আমরা কাজ করছি। শিগগিরই মানুষ সেবা নিতে পারবেন। আমাদের শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে যন্ত্রাংশের অনেক সংকট রয়েছে। সেগুলো নিয়েও আমরা কাজ করছি। দালালের উৎপাত, রোগীদের ভোগান্তি এ ধরনের কোনও অভিযোগ নির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। এছাড়া পানিতে আয়রন, ট্যাপের পানিতে ময়লা ও লাল রঙের পানি পড়ায় বাথরুম ও শৌচাগারের ফ্লোরগুলো লাল হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো পিডব্লিউডিকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।’