মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘চক্রটি এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ২৩ জনের নামে ভুয়া প্রবেশপত্র, ২০ জনের নামে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য পত্র, ২১ জনের নামে ভুয়া নিয়োগ, চট্টগ্রাম বন্দরে একজনের নামে নিয়োগপত্র ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পত্র, সেনাবাহিনীতে চারজন ও এনবিআর-এ ২৭ জনের নামে নিয়োগপত্র ইস্যু করেছে।’
গ্রেফতার দুজন হলেন—আনোয়ার হোসেন প্রকাশ আতিকুর রহমান ও মো. তোফাজ্জল হোসেন (৫৪)। আতিক ফেনীর পরশুরাম থানার সালামত আলী চৌধুরী বাড়ির মোস্তফা চৌধুরীর ছেলে এবং তোফাজ্জল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার চরতালিমাবাদের মৃত খবির উদ্দিনের ছেলে। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রিপন সিকাদার (৩০) নামে এই মামলার আরেক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘দায়িত্ব পাওয়ার পর সন্তোষ কুমার চাকমার নেতৃত্বে পিবিআইয়ের একটি টিম ভুয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম সদস্য মো. রিপন সিকদারকে গ্রেফতার করে। পারে জিজ্ঞাসাবাদে সংঘবদ্ধ চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে সে এবং সহযোগী হিসেবে আনোয়ার হোসেন ও তোফাজ্জলের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। রিপনের মোবাইল পর্যালোচনা করেও বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে নগরীর হোটেল পূবরী থেকে আতিকুর ও তোফাজ্জলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর, এনবিআর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগ সংশ্লিষ্ট নিয়োগপত্র, প্রবেশপত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।’
এ সর্ম্পকে পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে তারা সংঘবদ্ধভাবে পরস্পর যোগসাজশে চট্টগ্রাম কাস্টমস-সহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের কথা বলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোক সংগ্রহ করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়। তাদের দেওয়া জবানবন্দি ও তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আমরা জেনেছি, ভুয়া নিয়োগ প্রদানের জন্য তারা নিজেরাই বিভিন্ন পদের জন্য সার্কুলার ইস্যু করে থাকে। এরপর একটি অফিসে নিয়োগের জন্য যত ধরনের প্রক্রিয়া সম্পাদন করতে হয়, সবকিছু তারাই করে। বিভিন্ন হোটেলে এনে নিয়োগপ্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষা নেয়। পুরো টাকা বুঝে পাওয়ার পর নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের সামনে নিয়োগ প্রার্থীকে নিয়োগপত্র বুঝিয়ে দিয়ে যোগাযোগে ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ করে দেয়।’