জুমের ফসল ঘরে তোলায় ব্যস্ত চাষিরা

জুমের ফসল কাটছেন চাষিরাতখন সূর্য ঠিকমতো ওঠেনি। কেবল আভা ছড়িয়েছে। এরই মধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পাহাড়ি জনপদ। কারণ পাহাড়ে পাহাড়ে থাকা জুমক্ষেতের ধান কাটা চলছে। পাহাড়ি নারী-পুরুষ সবাই মিলে ধান কেটে রাখছেন পিঠের ঝুড়িতে। এরপর নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। অনেকে এরই মধ্যে ফসল কাটা শেষ করেছেন। বছরের এ সময়টা রাঙামাটির সবুজ পাহাড়ে চলে ধান কাটার উৎসব। এবার ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনপদের লোকজন জুম চাষ করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। যে বছর জুমে ভালো ফলন হয় না সে বছর অনেকেই খাদ্য সংকটে থাকেন। চলতি বছর বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের জুমিয়া পরিবারগুলোয় খাদ্য সংকট ছিল বলে জানা গেছে।

জুমের ফসল কাটছেন চাষিরাজুম চাষিরা পৌষ-মাঘ মাসে পাহাড়ের ঢালের জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করেন। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে পাহাড় জুম চাষের উপযোগী করা হয়। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে পোড়া জুমের মাটিতে একসঙ্গে ধান, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, তুলা, তিল, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকম বীজ রোপণ করা হয়। এখন কাটা হচ্ছে ধান।

জুমের ফসল কাটছেন চাষিরা

শহরের বড়দাম এলাকার জুমিয়া সোনালী চাকমা ও মনিকা চাকমা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার জুমের ফসল ভালো হয়েছে। কিন্তু আগের মতো ফলন পাওয়া যায় না। যা পাওয়া যায় তা দিয়ে বছর চলে না।  যা পাওয়া যায় তা দিয়ে বছেরর অর্ধেক চলে।

জুমের ফসল কাটছেন চাষিরাশুভ চাকমা বলেন, জুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে যা আশ্বিন মাস পর্যন্ত চলবে। জুমে ধান চাষের একইসঙ্গে পাহাড়ে বাম্পার ফলন হয়েছে মারফা, বেগুন, মরিচ, ঢেঁড়শ, কাকরোল, আদা, পেঁপে ও কুমড়াসহ নানা ফসলের।

জুমের ফসল কাটছেন চাষিরা

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, এবারের ৫ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমির জুমের ধান আবাদ করা হয়। এর প্রায় ৫০ ভাগ জুম কাটা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জুমের ফলন দিন দিন কমে যাওয়ায় চাষিরা কাজু বাদাম, কফি ও বারি মাল্টা-১ ও বারি মাল্টা-২ চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।