২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে দুষ্কৃতকারীরা রামুর বৌদ্ধ পল্লিগুলোয় হামলা চালায়। রামুর বাসিন্দা উত্তম বডুয়ার ফেসবুক আইডিতে পবিত্র কোরআন অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ তুলে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এতে কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফে ১৩টি বৌদ্ধ বিহার এবং ৩০টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ভেঙে ফেলা বৌদ্ধ বিহার ফের নির্মাণ করা হয়েছে।
ঘটনার ৭ বছর পর সেই দিনের স্মৃতি কিছুটা ম্লান হলেও ভুলে যাননি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ। সেদিনের কথা মনে করে এখনও আঁতকে ওঠেন তারা। তবে তাদের বিশ্বাস, রামুতে আগের মতো সম্প্রীতি এখনও বিরাজ করছে। কিন্তু তারা হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়েছেন। বৌদ্ধ মন্দিরে হামলায় জড়িতরা এখনও আইনের আওতায় না আসায় হতাশ তারা। অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ডেভেলপমেন্ট কক্সবাজার শাখার চেয়ারম্যান সুরেশ বড়ুয়া বাঙ্গালী বলেন, ‘আমরা এখনও সুষ্ঠু বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। প্রকৃতপক্ষে যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। আমরা চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক।’
রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের সহকারী পরিচালক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, ‘২০১২ সালে যে ঘটনা ঘটেছে, তার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে রামুর ঘটনায় যে মামলাগুলো হয়েছে এতে কোনও সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় এবং প্রকৃত আসামিরা যাতে শাস্তি পায়।’
প্রসঙ্গত, রামুর বৌদ্ধ বিহারে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছিল ১৯টি। এরমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ১৮টি মামলা করে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে একটি মামলা করলেও পরে বিবাদীদের সঙ্গে আপসনামা দিয়ে খালাস করেছেন। বিচারাধীন ১৮টি মামলায় সাক্ষী না পাওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘসূত্রতা।