ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কাল ভৈরব মন্দিরে চার দিনব্যাপী বার্ষিক মহোৎসব শুরু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্রীশ্রী কাল ভৈরব মন্দিরে চার দিনব্যাপী সপ্তশতী বার্ষিক মহাযজ্ঞ মহোৎসব শুরু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মেড্ডায় তিনশ’ বছরের প্রাচীন মন্দির শ্রীশ্রী কাল ভৈরব মন্দিরে চার দিনব্যাপী সপ্তশতী বার্ষিক মহাযজ্ঞ মহোৎসব শুরু হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বৈদিক পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে চার দিনব্যাপী মহাযজ্ঞ মহোৎসবের উদ্বোধন করেন মন্দির কমিটির সভাপতি পলাশ ভট্টাচার্য। এসময় বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পুরোহিত ও পণ্ডিতরাসহ স্থানীয় ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে দুপুর ১২টার দিকে জীব জগতের কল্যাণ কামনায় সপ্তশতী মহাযজ্ঞ শুরু হয়। যজ্ঞ অনুষ্ঠানে দেশ বিদেশের ভক্তরা যজ্ঞের আহুতি হিসেবে ফল, ফুল,দূর্বা,বেলপাতাসহ বিভিন্ন পূজার সামগ্রী নিয়ে অংশ নেন।

বৈদিক পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মহাযজ্ঞ মহোৎসবের উদ্বোধন করেন মন্দির কমিটির সভাপতি পলাশ ভট্টাচার্য

এসময় যজ্ঞ অনুষ্ঠানের প্রধান পুরোহিত মধুসুধন চক্রবর্তী এবং মন্দির কমিটির সভাপতি পলাশ ভট্টাচার্ষ জানান, আজ  (বুধবার) থেকে ৩শ’ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফুলবাড়ী গ্রামের দূর্গাচরণ আচার্য্য স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে শহরের মেড্ডা এলাকার তিতাস নদীর তীরে শ্রী শ্রী কালভৈরব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে জীব জগতের কল্যাণ কামনায় প্রতিবছর এই যজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। মাঝখানে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনী মন্দিরটিকে ডিনামাইটের মাধ্যমে ক্ষতি সাধন করেছিলেন, পরে ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারীর প্রচেষ্টায় ভক্তরা মন্দিরটিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

আয়োজকরা জানান, প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানে সকলের মঙ্গলকামনায় ভক্তরা ভারত-নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসে সমবেত হন।

ভারত থেকে আসা অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, আমি পেশায় একজন আইনজীবী। প্রতিবছর এ উৎসবে আসি। এবারও এসেছি। বার্ষিক এ যজ্ঞ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।

জীব জগতের কল্যাণ কামনায় প্রতিবছর এই যজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়ে আসছে

সিলেট থেকে মন্দিরে আসা রিতা ঘোষ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্বপ্না সাহা জানান, কালভৈরব বাবার মন্দিরে প্রতি বছর আসি। এসে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য এবং দেশের সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করি। দেশ ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো। তাই সকলের জন্য প্রার্থণা করছি।

চার দিনব্যাপী বার্ষিক এই উৎসবে প্রতিদিন শ্রীমৎ ভগবৎ গীতাপাঠসহ ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার থেকে অষ্ট প্রহরব্যাপী হরিনাম সংকির্ত্তন শুরু হবে। উৎসবকে কেন্দ্র করে মন্দির প্রাঙ্গণে বসেছে লৌকজ মেলা।