বরিশাল নগরীর বেকারি ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান হত্যার মামলায় বাবা ও মেয়েকে গ্রেফতার করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। নিহত মাসুদ নতুন বাজার টেম্পোস্ট্যান্ড এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি ওই এলাকায় বেকারির ব্যবসা করতেন।
গ্রেফতাররা হলেন- নিহতের প্রেমিকা স্বামী পরিত্যক্তা হাফিজা বেগম শান্তা ও তার বাবা শওকত হোসেন মোল্লা। তারা উভয়ই বরিশাল নগরীর এয়ারপোর্ট থানাধীন শেরে বাংলা সড়কের বাসিন্দা।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেলের এসআই তানজিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাজীব রেজা বলেন, গত ৯ এপ্রিল রাতে নগরীর কলেজ এভিনিউর একটি দোতলা বাসায় প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে প্রেমিকা শান্তা ও তার আত্মীয়-স্বজনদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান। পরে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় মামলা করার পর পুলিশ লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তসহ প্রাথমিক কার্যাবলি সম্পাদন করে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।
তিনি বলেন, এর ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার সকালে শেরেবাংলা সড়ক থেকে অভিযুক্ত প্রেমিকা শান্তা ও তার বাবা শওকতকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠান।
এসআই রাজীব আরও জানান, শান্তার সঙ্গে ভুক্তভোগী মাসুদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর সুযোগ নিয়ে শান্তা তার প্রেমিক মাসুদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো। সর্বশেষ ৯ এপ্রিল রাতে শান্তা তার বাসায় আসার জন্য বলে মাসুদকে। সেখানে যাওয়ার পর তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় রাজি না হলে শান্তা ও তার আত্মীয়স্বজন মাসুদকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে মাসুদের সঙ্গে থাকা প্রায় দুই লাখ টাকা তারা নিয়ে যায়। এ সময় টাকা নিয়ে আবারও তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হলে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুই দিন পর মারা যান মাসুদ।
মাসুদের ভাই মাহফুজুর রহমান জানান, তার ভাইয়ের বেকারি ব্যবসা রয়েছে। তার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর শান্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গত বুধবার বেকারির মালামাল আনার জন্য দুই লাখ টাকা নিয়ে রওনা হয় মাসুদ। তখন শান্তা ফোন করে মাসুদকে বাসায় ডাকে। এরপর শান্তা ও তার ভাই লোকমান হোসেন ওই টাকা নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলে দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় মামলা করেছেন।