বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সেলিমের শিশুকন্যার দায়িত্ব নিলেন জামায়াত আমির

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত ঝালকাঠির সেলিম তালুকদারের শিশুকন্যার দায়িত্ব নিয়েছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। সোমবার দুপুরে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকার সেলিম তালুকদারের শ্বশুরবাড়িতে শিশুকন্যাকে দেখতে এসে দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

গত বছরের ১৮ জুলাই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হয়ে ঢাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন সেলিম তালুকদার। ১৫ দিন ঢাকাতেই একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩১ জুলাই রাতে মারা যান। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সেলিম ছিলেন দ্বিতীয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। নিহত সেলিমের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা শহরের টিঅ্যান্ডটি এলাকায়। তিনি নারায়ণগঞ্জের তৈরি পোশাকের একটি কারখানায় সহকারী মার্চেন্ডাইজার পদে চাকরি করতেন।

মারা যাওয়ার এক বছর আগে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকার মতিউর রহমানের মেয়ে সুমিকে বিয়ে করেন সেলিম। ৮ মার্চ ঝালকাঠির একটি ক্লিনিকে তার স্ত্রী একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।

সেলিম তালুকদারের মেয়েকে দেখতে এসে তার নাম রাখার পাশাপাশি দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, ‘এই শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে নাম রাখা হয়েছিল রোজা। আমরা ওর নাম দিচ্ছি সাইমা সেলিম। শিশুটি বড় হওয়া পর্যন্ত আমরা তার সঙ্গে থাকবো। সে আমাদের পরিবারের সদস্য, আমাদের কাছে আমানত। এই শিশুর লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ তার বিবাহের দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামের।’

এর আগে দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাব চত্বরে জেলা জামায়াতে ইসলাম আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আমির শফিকুর রহমান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হেলিকপ্টারে করে ঝালকাঠি পৌর মিনি স্টেডিয়ামে এসে নামেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার চেয়ে পথসভায় জামায়াত আমির বলেন, ‘খুনিদের দ্রুত বিচার হোক, ন্যায় বিচার হোক। বিচার হলেই শহীদদের পরিবার ও দেশবাসী শান্তি পাবে। সরকার প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, সেটা দেওয়া হলে পরিবারের জন্য উপকার হবে। এ ছাড়া আহত যারা আছেন, তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের সংগঠন থেকে তৌফিক অনুয়ায়ী তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।’