ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা দেওয়ার পর জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন, তারা সবাই শঙ্কামুক্ত। কারও বড় ধরনের কোনও সমস্যা হয়নি। সুস্থ হয়ে সবাই বাড়ি ফিরে গেছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থদের মধ্যে পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় ভোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগই ৬ষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়। টিকা প্রয়োগের পর প্রথমে এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে অসুস্থ শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা অনেকে সুস্থ হয়ে ওঠে। দুপুরে ৫৫ শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়ি ফিরে যায়। বাকি পাঁচ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ভোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিরুপম সরকার সোহাগ বলেন, ‘টিকা দেওয়ার সময় আমি ওই বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলাম। তখন অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। চিকিৎসা দেওয়ার পর বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সুস্থ হয়ে যায়। কেউ কেউ আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।’
জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. নোমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘টিকা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিভিন্ন ক্লাসের ৬০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠে। পাঁচ জনকে ভোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
ভোলা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নাহিদ সুলতানা বলেন, ‘টিকার প্রভাবে শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়েছে, এতে কয়েকজন অসুস্থ হয়েছে। যারা চিকিৎসা নিতে এসেছে তারা সবাই সুস্থ এবং শঙ্কামুক্ত।’
ভোলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ। ভয় থেকে অসুস্থ হয়েছে। যা কয়েক ঘণ্টার পর ঠিক হয়ে গেছে।’
গত ২৪ অক্টোবর থেকে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং স্কুলের বাইরে থাকা ১০ থেকে ১৪ বছরের কিশোরীকে বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া শুরু হয়। দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (গ্যাভি), ইউনিসেফ এবং ডাব্লিউএইচওর সহায়তায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।