প্রতিবন্ধী, অসহায়, বন্যাদুর্গত ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের ভাতার নামে আওয়ামী লীগ নেতা, ইউপি সদস্য, সাংবাদিক ও তার নিজস্ব লোকদের টাকা দিতেন সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মো. মহিববুর রহমান মহিব। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সেবা) অসীম চন্দ্র বণিক স্বাক্ষরিত গত ৯ জুনের একটি প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় ১২৩ জন ব্যক্তির অনুকূলে তাদের প্রত্যেককে ৫-১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যেখানে টাকার পরিমাণ সাড়ে সাত লাখ।
১২৩ জনের তালিকায় রয়েছেন কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনন্ত মুখার্জি, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল ওয়ান স্টারের মালিক মাহবুব আকন, সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী, ধুলাসার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহ আলম, মহিপুর থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি আবুল কালাম ফরাজি, কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী রইসুল ইসলাম শিবলু, ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোদাচ্ছের হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর তোফায়েল আহমেদ তপু, আলীপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ফকিরসহ তালিকায় বেশির ভাগ ব্যক্তিই সুস্থ, সচ্ছল ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা।
সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী (মহিববুর রহমান মহিব) বিভিন্ন সময়ে তার নেতাকর্মীদের নামে খামে করে টাকা পাঠাতেন। সেভাবে আমিও অনেকসময় পেয়েছি। তবে এই নাম কীভাবে যুক্ত করা হয়েছে বা কে দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই। আর আমি কোনও টাকাপয়সাও পাইনি।’
বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও ফি সাবিলিল্লাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মিছবাহ বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ তাকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পেয়ে আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু প্রতিবন্ধী ভাতা সুস্থ ও দলের মানুষদের দিয়ে তার প্রতি ঘৃণা বাড়িয়েছে। এটা আমার এলাকার জন্য চরম লজ্জার।’
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এটা সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে এসেছে। কে পাবে আর পাবে না সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব তার। সরকারি টাকা আমার মাধ্যম হয়ে ইতোমধ্যে বিতরণ হয়ে গেছে এবং তালিকায় থাকা সবাই টাকা গ্রহণও করেছে।’