সরকার পতনের পরপরই শুরু হয় হামলা-লুটপাট ও জমি দখল

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে বরগুনা ও পাথরঘাটায় একদিকে চলছে জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ কর্মীদের ওপর বেড়েছে হামলা ও নির্যাতন। এসব কাণ্ডে অভিযোগের আঙুল উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারে পশুচিকিৎসক বিকাশ কুমারের বসতঘরে হামলা ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়াও বরগুনা শহরের ভাড়ানি খালের পশ্চিম ও পূর্বপাড়ে গভীর রাতে জমি দখল করে সীমানা নির্ধারণ করে সুতলি টানিয়ে দেয় একদল দখলদার। পরে বুধবার (৭ আগস্ট) সকালে নৌবাহিনীর সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অবৈধ দখলদারদের সীমানা উচ্ছেদ করা হয়।

এ ছাড়া সোমবার রাতে পাথরঘাটার কাঁঠালতলীতে মহারাজ নামের এক ব্যক্তির স-মিল পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। কাঁঠালতলী বাজারের সুমন অধিকারী নামের একজন ব্যবসায়ীর মুদির দোকানে হামলা ও লুটপাট করা হয়। একই এলাকার হোগলাপাশা গ্রামে প্রশান্ত নামের একজনের ফার্মেসিতে হামলা ও লুটপাট করা হয়। মুন্সিরহাটে এক ব্যবসায়ীর দোকান লুট করে নেওয়া হয় মালামাল।

বুধবার সকালে পাথরঘাটার পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মহিলা মাদ্রাসা এলাকায় রাস্তার পাশের ২০-২৫টি ছোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল ও লুট করে দুর্বৃত্তরা।

মারধর করা হয় কাকচিড়া বাজার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম পহলানকে। এ ঘটনায় তার সমর্থকরা রাজন নামে একজনের ফার্মেসি ও আ. রশিদের হার্ডওয়্যারের দোকানে হামলা ও লুট করে। তালতলীর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে সোমবার রাতে দুর্বৃত্তরা হামলা চালাতে গেলে সেখানে দায়িত্বরত নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা প্রতিহত করেন।

এ বিষয়ে পশুচিকিৎসক ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিকাশ কুমার বলেন, ‘সরকার পতনের খবর শুনেই সোমবার রাতে স্থানীয় কিছু লোকজন আমার বাড়িতে হামলা ও লুট করে। আমার ঘরে থাকা নগদ অর্থসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে গেছে।’

বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম মিয়া বলেন, ‘যারা বিভিন্ন জায়গা দখল ও হামলা চালিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সোমবার রাতে যারা ভাড়ানি খালের পাড়ে দখল নিয়েছিল সেগুলো আমরা উদ্ধার করেছি। এরপরও যদি কেউ দখল বা হামলার চেষ্টা করে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যারা রাতের আঁধারে জায়গা-জমি দখল করবে এবং হামলা-লুট চালাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ জনগণের পাশে সব সময় জেলা প্রশাসন রয়েছে। কোথাও কোনও অরাজকতা সৃষ্টি করলে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।’