মাদ্রাসা শিক্ষককে জুতার মালা পরানো সেই ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার বরখাস্ত

গ্রেফতার ইউপি চেয়ারম্যান (গোল রেখায় চিহ্নিত) ও মেম্বারবরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও সিকদারবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম শহিদুল ইসলামের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী এবং একই ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শহীদ দেওয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ জুন) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বরখাস্তের এই আদেশ আসে।

এই ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরুদ্ধে ইমাম শহীদুল ইসলামকে লাঠি, জুতা ও ঝাড়ু ব্যবহার করে লাঞ্ছিত, ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি, জুতার মালা পরিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

সাময়িকভাবে বরখাস্ত চেয়ারম্যান ও সদস্যকে পৃথক কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে বলা হয়েছে। নোটিশে কেন তাদের চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না তার জবাবপত্র ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।

এভাবে জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানো হয় মাদ্রাসা শিক্ষককেউল্লেখ্য, দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা শিক্ষক শহিদুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে জমা হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই ছাত্রীর বাবা মাদ্রাসা এসে শহিদুল ইসলামকে মারধর করেন এবং তার মোবাইলের সিমটি নিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী ৩ জুন বিকালে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সালিশ বৈঠক ডাকেন। সালিশ বৈঠকে উপস্থিত হলে শহিদুল ইসলামকে গালি এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে তা পরিশোধ করতে চাপ দেওয়া হয়।

শহিদুল ইসলাম জরিমানার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে মারধর করে পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং মাথার টুপি খুলে গলায় জুতার মালা পরিয়ে স্টিমারঘাট বাজারে ঘোরানো হয়। বিষয়টি চেয়ারম্যানের লোকজন মোবাইল ফোনে ধারণ করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে ভাইরাল হয়। পরে বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে শহিদুল ইসলামকে বাদী করে চেয়ারম্যানসহ ১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় চেয়ারম্যানসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন...

জুতার মালা পরিয়ে জনসম্মুখে ঘোরানো হলো মাদ্রাসা শিক্ষককে!