মুক্তামনির বাবা সেন্টু মিয়া সাভারে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। মা ঝুমুর বেগম বলেন, ‘দুই বছর আগে মুক্তা সাভারে গিয়েছিল। সেখানে খেলতে খেলতে পাখি ধরতে গিয়ে বিদ্যুতের তার ধরে মুক্তা। এরপর ধীরে ধীরে তার দুই হাত বিকল হয়ে যেতে শুরু করে। প্রথমে দুই হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়। এক পর্যায়ে হাতের বাকি অংশ কেটে ফেলতে হয়।’
তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর গ্রামে দাদি জাহানারা বেগমের কাছে থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলে পুনরায় পড়াশোনা করতে চায় মুক্তা। তার ইচ্ছেতেই ২০১৮ সালে পত্তণীভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে মুক্তামনিকে ভর্তি করা হয়। এরপর সে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করে। এখন সে পা দিয়েই হাতের মতোই স্বাভাবিক গতিতেই লিখতে পারে।
ঝুমুর বেগম বলেন, তার স্বামী তেমন কাজকর্ম করতে পারেন না। নিজের সামান্য উপার্জনে দুই মেয়েকে পড়াশোনা করাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। তারপরও মেয়েদের আগ্রহের কারণে এখনও তাদের পড়াশোনা চালিয়ে নিচ্ছেন। তিনি মেয়েদের উচ্চশিক্ষিত করতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
মুক্তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাছিমা খানম বলেন, ‘মুক্তামনির পড়াশোনা করার ইচ্ছা কতটা প্রবল তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। আমাদের স্কুল থেকে এবারে ১৪ জন শিক্ষার্থী পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এদের একজন মুক্তা। ওর (মুক্তা) পায়ের লেখাও অন্যদের হাতের লেখার চেয়ে অনেক সুন্দর।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তামনি এতটাই ভালো ছাত্রী সে কখনও বিনা কারণে স্কুলে অনুপস্থিত থাকে না। নিজের যেকোনও সমস্যা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে নেয়।’