ছোটমনি নিবাসে ফাতেমার মতো মা-হারা আরও ২১ শিশু বেড়ে উঠছে। গর্ভধারিণী মায়ের স্নেহ ছাড়াই কাল্পনিক মা-বাবার পরিচয় নিয়ে ছোটমনি নিবাসে বেড়ে উঠছে কুড়িয়ে পাওয়া এসব শিশুরা। বোঝার পর থেকে আয়াদের মা হিসেবে জানলেও ৭ বছর বয়সে সেই মায়ের সঙ্গে তাদের বিচ্ছেদ হয়। ওই বয়সে ছোটমনি নিবাস থেকে তাদের শিশু পরিবারে স্থানান্তর করা হয়। দেশে দত্তক আইন না থাকায় নিঃসন্তান দম্পতিও তাদের দত্তক নিতে পারেন না। তাই শিশুদের মাতৃস্নেহে বেড়ে উঠতে দত্তক আইন করার দাবি করেছেন অনেকে।
ছোটমনি নিবাসের উপ-তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দত্তক নেওয়ার জন্য প্রতিদিন জায়গা থেকে অনেকে ফোন করেন। অনেকে ছোটমনি হোমে এসে শিশুদের দেখে যান। এদের মধ্যে থেকে কোনও শিশুকে পছন্দ করে তাকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন জানালেও ওই আইন না থাকায় শিশুদের দত্তক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
বরিশাল সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, ছোটমনি হোমে শূন্য থেকে ৭ বছর পর্যন্ত শিশুদের লালন পালন করা হয়। এরপর শিশুদের দেওয়া হয় বরিশালের শিশু পরিবারে। সেখানে সে বড় হয়। তার জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবা-মায়ের নামের জায়গায় কাল্পনিক নাম এবং বয়সের জায়গায় কাল্পনিক বয়স ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আসলে দুঃখজনক। তবে দত্তক আইন থাকলে এসব শিশুরা মাতৃস্নেহে বড় হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মায়ের পরিচয় পেতো।’
জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, কুড়িয়ে পাওয়া শিশু যাতে পারিবারিক আবহে মাতৃস্নেহে বড় হতে পারে এজন্য দত্তক আইনটি সচল করতে সরকারের বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি উত্থাপন করবেন। এমনকি যত দ্রুত সম্ভব এ আইনটি সচলে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
১৯৭২ সালে দত্তক আইন করা হলেও নানা অভিযোগের কারণে ১৯৮২ সালে আইনটি বাতিল করা হয়।